বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ সুরা হাদিদ পড়তে পারেন। মনে হবে যেন এখনকার সময়ের জন্যই আল্লাহ নাজিল করেছেন। কুরআনের সবচেয়ে বড়ো শক্তি হলো এই আসমানী কিতাবটি সবসময়ই অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। আল্লাহ বলেছেন,
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব একমাত্র তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশ্য এবং অদৃশ্য। তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (১-৩)
তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে সম্পদের মালিক করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার। (আয়াত ৬)
যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি এখনো আল্লাহর স্মরণে ব্যস্ত হওয়ার এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয়টি কোমল হওয়ার মতো সময় আসেনি? তারা যেন অতীতের কিতাবধারী ব্যক্তিদের মতো না হয়ে যায়। তাদের ওপর কিতাব নাজিল হওয়ার পর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়ে যায়। এরপর অতঃপর তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের অধিকাংশই পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল। (১৬)
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি। অপরদিকে যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। (১৯)
তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়। এগুলোর উদাহরণ এমনই এক বৃষ্টির মতো, যার সবুজ ফসল কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, এরপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তাকে পীতবর্ণ দেখতে পাও, এরপর তা খড়কুটা হয়ে যায়। আর পরকালে আছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ বৈ কিছু নয়।
পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; এগুলো সবই বিশ্বজগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। এটা এজন্যে বলা হচ্ছে, যাতে তোমরা যা হারাও তার জন্য দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তার জন্যও অধিক উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না। (২২-২৩)
এখান থেকে আমরা যা শিখতে পারি...
১. আল্লাহর ক্ষমতার বিষয়ে পূর্ণ আস্থা রাখা। যুক্তি আর বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা শেষ হবে। একটা সময় গিয়ে বিজ্ঞান চুপ হবে। কিন্তু আল্লাহর অবস্থান ও বাণী কখনোই ম্লান হবে না।
২. ঈমান মজবুত করতে হবে। নিজেদের আয় থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় বাড়াতে হবে।
৩. ইসলাম ও আল কুরআন সত্য। এটা মানলেও আমরা এগুলোর ভেতরে নেই। আমাদের অন্তরটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই সত্য জানার পরও আমরা পাপ করছি। এভাবে চলতে থাকলে তা ভয়ংকর পরিণতির দিকে আমাদেরকে নিয়ে যাবে।
৪. আল্লাহর নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করা যাবে না। এগুলোকে নিয়ে ফান করার সুযোগ নেই।
৫. যা আজ সুন্দর লাগছে, তাই আগামীকাল পঁচা খড়কুটোর মতো হয়ে যাবে। এই দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবন আনন্দ আয়োজন প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।
৬. যা আমরা হারাবো, তা ভাগ্যে ছিলনা বলে মেনে নেওয়া এবং তার জন্য দু:খ না করা। আর যা পাবো তা নিয়ে অধিক উল্লাস না করা। কেননা আল্লাহ যে কোনো সময় তা কেড়ে নিতে পারেন।
৭. আল্লাহ কোনো ঔদ্ধত্য ও অহংকারীকে পছন্দ করেন না। তাই এই দুইটি বিষয় থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকতে হবে।
(A lot blessing to Ali Ahmad Mabrur)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন