* দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা*

ইসলামী ব্যাংক দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র * সকল প্রকার একাউন্ট খুলতে * * টাকা জমা করতে * টাকা উঠাতে * * বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স এর টাকা বোনাসসহ উঠাতে * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে আসুন। * * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা* * প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ 01711-458151* 01700-925241*

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

প্রসঙ্গ: হাসান মাহমুদ চৌধুরী: স্মৃতিতে অম্লান

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ হাসান মাহমুদ চৌধুরী আমার খুবই আপনজন। দেশের একজন প্রথিতযশা ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি জনাব চৌধুরী ছাত্র জীবনে আমার তিন বছরের সিনিয়র হলেও শাহজালাল হলের আবাসিক ছাত্র হওয়ার সুবাদে ব্যক্তিগত সম্পর্কের গভীরতার কাছে সিনিয়রিটি- জুনিয়রিটির বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই গৌণ ছিল।

এই সম্পর্কের সূত্র ধরে ফেনী শহরে দুইবার তাঁর বাসায় যাওয়ার আমার সুযোগ হয়। তাঁর বড় ভাই সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য জনাব জিয়া উদ্দিন বাবলুর বিয়ের অনুষ্ঠানেও আমি অংশগ্রহণ করি। মাঝে মধ্যে কোন উপলক্ষে দেখা সাক্ষাৎ হলে আমরা অতীতের অনেক অম্ল মধুর স্মৃতি রোমন্থন করতাম। আমি বিভিন্ন সময়ে যেই সব কৌতুক বলে পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছি তিনি অনায়াসে সেগুলো বলে আমাকে রোমাঞ্চিত করতেন। আমার ছাত্র কিংবা শিষ্যের দেখা পেলে সালাম পৌঁছাতেন।

বাহ্যিক অবয়বে তিনি যেমন ছিলেন সুন্দর আত্মিক দিক দিয়েও তেমন ছিলেন বরফের মত স্বচ্ছ ও নির্মল। চলনে বলনে আভিজাত্যের ছাপ ছিল। মানুষকে আপন করে নেওয়ার এক অসাধারণ গুণ ছিল তাঁর। অনেক জনহিতকর কাজের সাথে যুক্ত থেকে তিনি আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে অনবদ্য অবদান রাখেন।

চাঁদগাঁও আবাসিক এলাকা এবং সেখানকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উন্নয়নে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করেন। করোনাকালীন সময়েও তিনি আর্ত- মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন এবং সরকারী ও বেসরকারী ফান্ডে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন।

এই করোনাযোদ্ধা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আমি তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেছিলাম। কিন্তু একটু আগে আমার একান্ত স্নেহভাজন ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান আমাকে ফোনে নিশ্চিত করেছেন যে, জনাব হাসান মাহমুদ চৌধুরী কিছুক্ষণ আগে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন।

আমি মরহুমের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর সকল দ্বীনি খিদমাত কবুল করে তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করার জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করছি।

আব্দুল কাদেরের ওয়াল থেকে


একজন মুরতাদ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আবু মামার (র.) .. .. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত,  তিনি বলেন,  এক খৃস্টান ব্যক্তি  মুসলমান হল এবং সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরান শিখে নিল। নবী করিম (সঃ) এর জন্য সে অহী লিপিবদ্ধ করত। তারপর সে পুনরায় খৃস্টান হয়ে গেল। সে বলতে লাগল, আমি মুহাম্মদ (সঃ) কে যা লিখে দিতাম তার চেয়ে  অধিক কিছু তিনি জানতেন না। (নাউজুবিল্লাহ) কিছুদিন পর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দিলেন। খৃস্টানরা তাকে যথারীতি দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে বাইরে নিক্ষেপ করে দিয়েছে।

তা দেখে খৃস্টানরা বলতে লাগল-এটা মুহাম্মদ (সঃ) এবং তাঁর সাহাবীদেরই কাজ। যেহেতেু আমাদের এই সাথী তাদের থেকে পালিয়ে এসেছিল। এ জন্যই তারা আমাদের সাথীকে কবর থেকে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে।

তাই যতদূর সম্বব গভীর করে কবর খুঁড়ে তাতে তাকে পুনরায় দাফন করল। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা গেল, কবরের মাটি তাকে (গ্রহণ না করে) আবার  বাইরে ফেলে দিয়েছে। এবারও তারা বলল এটা মুহাম্মদ (সঃ) এবং তাঁর সাহাবীদের কান্ড। তাদের নিকট থেকে পালিয়ে আসার কারণে তারা আমাদের সাথীকে কবর থেকে উঠিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছে। 

এবার আরো গভী করে কবর খনন করে তাকে সমাহিত করা হল। পরদিন ভোরে দেখা গেল কবরের মাটি এবারও তাকে বাইরে নিক্ষেপ করেছে।

তখন তারা বুঝতে পারল, এটা মানুষের কাজ নয়। কাজেই তারা শবদেহটি বাইরেই ফেলে রাখল।

সহীহ্ বুখারী শরীফ- ৩৩৫৯

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কলুষিত সমাজ : প্রকাশ তামলী

 

২০/০৯/২০
কারাগারে যারা বন্দি থাকে

সবাই কি দোষী হয়?
জেলের বাইরে ঘুরে যারা 
সবাই সাধু নয়।।
ধর্ষণ আজ নিত্য খবর 
কাগজের প্রতি পাতায়, 
তবু ধর্ষকেরা ছাড় পেয়ে যায়
সামান্য কিছু টাকায় ।।
পাপে আজকে ভরে গেছে
সমাজের প্রতি কোনায়,
বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে
রাতের নিরবতায়।।
সত্যের পথে আমার কলম
চলবে চিরকাল, 
আমি হিন্দু হয়েও ভালোবাসি
কাজী নজরুল ইসলাম।।


বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পারভিন সুলতানাঃ একজন ফেইস বুকার ও দাঈয়াহ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২০১০/১১ এর দিকে। ফেইসবুকে পারভিন সুলতানা নাম্নি একজন মেয়ের একটা মেসেজ পাই। অনেক দরদ ও সম্মান জড়ানো কিছু আবেগ সেখানে। তিনি বুঝাতে চাইলেন পীস টিভির “ইসলামে নারীর” আলোচনা থেকে তিনি নিত্য শিখছেন। তিনি চান আমার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে, যাতে দীনী কাজ করতে যেয়ে অনেক বিষয়ে আমার পরামর্শ নিয়ে বোনদের সাথে কাজ করে এগিয়ে যেতে পারেন। বয়সে তিনি আমার চেয়েও কয়েক মাসের বড়, এটা তিনি জানান দিলেন। এবং সাধারণতঃ চ্যাটে যেসব আলোচনা হয় তিনি তা থেকে দূরে অবস্থান করে আমাকে শিক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চান তার অনুরোধ করলেন।

তার আচরণে আমি সত্যিই অভিভূত হই। আমি ফেইসবুকে দিনে অন্তত ৫০টা মেসেজ পাই, যা সবই থাকে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন। আমি যথা সম্ভব উত্তর দেই। কিন্তু আমার এই বোন টার এপ্রোচ ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন।
তিনি আমার লেখা পড়তেন, সেখানে লাল কালির দাগ দিয়ে ভুল নিয়ে আলোচনা করতেন, উত্তম ভাষা শৈলির দীর্ঘ প্রশংসা ও কিভাবে এইটাকে আয়ত্বে আনা যায় তা নিয়ে বুঝতে চাইতেন। আমিও তার এইসব আলোচনা প্রশ্রয় দিতাম। কারণ তিনি দুইটা কাজ করতেনঃ সোনার বাংলাদেশ নামক ব্লগে তিনি “সত্য লিখন” ছদ্মনামে ব্যপক লিখতেন। যার লেখা গুলো মারহুম সবুজ কবির ভাই সহ অন্যন্য ব্লগারগণ প্রশংসা করতেন। এই লেখাগুলোর অনেকটাই আমার ইডিট করতে হতো। কোন লেখা “বাজার পেলে” তিনি শুকরিয়া করতেন, এবং আমাকে জানাতেন। আরেকটা কাজে তিনি ছিলেন খুব আন্তরিক, তা হল বাংলাদেশের মধ্যে বোনদেরকে সৃষ্টিশীল লেখক হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন বদ্ধ পরিকর।
পারভীন আপার দুই ছেলে থাকতো লন্ডনে। দুইজন ই মাশাআল্লাহ নামাজি ও তাদের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেয়ার মত। একবার তিনি আমার কাছে ফোন নাম্বার চাইলেন। ফোন করলেন। এবং ছেলে দুটোর জন্য গার্ডিয়ানের দ্বায়িত্ব দিলেন। তখন থেকেই তিনি আমাকে “দাদা”, অথবা “শিক্ষক দাদা” বলে ডাকতেন। একবার তিনি লন্ডন আসতে চাইলেন ছেলেদের কাছে। ছেলে মিশু আমার সাহায্য চাইল। আমি স্পন্সরশিপ দিলাম। কিন্তু তিনি আসবেন না বলে দিলেন। যখন কারণ জানতে চাইলাম, তিনি সাফ জবাব দিলেন, "দেশের যে ভয়ানক অবস্থা তাতে একবার লন্ডনে গেলে হয়ত আর বাংলাদেশে ফিরে আসা হবেনা। তখন তোমার স্পন্সরশীপের অবমাননা হবে, আর দেশে শাহাদাতী জাযবাহ নিয়ে দ্বীনী আন্দোলনের কাজে আমি আর থাকতে পারবোনা"। ছেলে মিশু আমাকে বুঝালো, আংকেল দ্বীনের ব্যাপারের আম্মা কোন কম্প্রমাইজ করবেন না। লন্ডন আসার এই সব হাতছানি তার ঈমানের কাছে কিছুই না।
তিনি লিখতেন, রাত জেগে জেগে লিখতেন। আমার বকাও শুনতেন। কারণ ওতো রাত জাগলে ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তিনি বলতেন, দাদা, স্বামী, সন্তান, পরিবার ও সংগঠনের কাজ সেরে তাহাজ্জুদের পরে একটু লিখতে বসি। আমি চাই তোমার লেখা আমিনা কুতুব, হামিদা কুতুব ও যায়নাব গাযালিদের মত দ্বীনের দাঈয়াহ হয়ে লেখনির মাধ্যমে দ্বীনের কাজ করতে। আমাকে দিয়েও তিনি অনেক লিখিয়ে নিয়েছেন। দ্বীনের কাজে মেয়েদের অবদান বিষয়ক সমস্ত লেখাগুলো তার নির্দেশে ও আবদারে আমি সম্পন্ন করেছি। সব সময় বলতেন, দাদা, আমি লেখনীর জগতে কিছু বোনকে প্রশিক্ষিত করতে চাই, যারা হবে আমিনা কুতুব ও হামিদা কুতুবের মত সব্যসাচী। তার ওয়ালগুলো দেখলে আপনি ই বুঝতে পারবেন কত পরিচ্ছন্ন মনের ছিলেন তিনি।
একবার এমন হলো যে, দীর্ঘদিন তার কোন লেখা দেখলাম না। আমি মেসেজ দিলাম তার উত্তরও পেলাম না। পরে জানলাম কয়েকবার স্ট্রোক হয়েছে তার, তবে সুস্থ হয়েই আবার দ্বীনি দায়িত্ব পালনে ব্রতী হয়ে যান। তিনি দ্বায়িত্ব পালনে বিভিন্ন পর্যায়ে হোঁচট খেতেন, আমার কাছে কান্না ভরা মেসেজ পাঠায়ে নাসীহা নিতেন। কোন একবার বিরক্ত হয়ে বললাম, তুমি কেন দুলা ভাইয়ের কথা মেনে আপততঃ ছুটি নিয়ে বাসায় থাকছোনা। দেশের এই পরিস্থিতিতে তোমাকে গ্রেফতার করা হলে কি ভয়াবহ অবস্থা হবে ভেবে দেখছো? দুলা ভাই হাইকোর্টের নাম করা আইনজীবি। তিনি যা বলেন মেনে নাও। তিনি বললেন, দাদা, আমাদের খাদিজা (রা) কেও তো অন্তরীণ অবস্থায় থাকতে হয়, আমিও চাই দ্বীনের কাজ করতে করতে কিয়ামতে খাদীজার (রা) মুখটা দেখার যোগ্যতা অর্জন যেন করতে পারি। আমি সেদিন তার ঈমানের প্যারামিটার ধরতে পেরেছিলাম।
তার অনেক অভিযোগ ছিলো আমাদের কাজ নিয়ে। তিনি মনে করতেন, আল্লাহ আমাদের যে যোগ্যতা ও মেধা দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে লাগাচ্ছিনা। তাকে বুঝাতাম অনেক বিষয়, কিন্তু তিনি মনে করতেন দ্বীন প্রতিষ্ঠার দ্বায়িত্ব আমরা আসলেই ঠিকমত পালন করছিনা। তার এই ঝাঁকুনি আমাকে ভাবাতো।
তার বিয়ে হয় খুব ছোট বয়সে। একদম ছোট বয়সে। সে কথা তার আত্মজীবনে তিনি তুলে ধরেছেন সুন্দর ভাবে। তখন তিনি ক্লাস সিক্সে পড়তেন। দু;লাভাই আইনজীবী জনাব গিয়াসউদ্দীন মিঠু ভাই তার লেখাপড়ার প্রতি এমন দয়ালু ছিলেন যে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে তাকে অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডুকেশনে মাস্টার্স নিতে সাহায্য করেছেন। তিনিও অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ছিলেন স্বামীর প্রতি এই অবদানের জন্য।
সাংসারিক ভাবে তিনি ও দুলাভাই অত্যন্ত সৎ জীবন যাপন করায় ঢাকা শহরের খুব বড় ধনীদের মধ্যে ছিলেন না। কিন্তু দান ও অবদানের ক্ষেত্রে এদের দুইজনের নাম অনেক বেশি। পারভিন আপা ছিলেন একজন ব্যক্তিক্রমী দানশীলা। গত দশবছরে আমি নিজে যে সব দানের সাক্ষী তা একজন জান্নাতের পথ-রাহীর জন্যই সাজে। আমাদের বন্ধু রফিক সাঈদী যখন ইন্তেকাল করেন, আমি জানতে পারি ভাবী মারহুমা সুমাইয়া অনেক আর্থিক কষ্টে আছেন। আমি কয়দিন ঘুমাতে পারিনি এই খবর শুনে। ফোন করি পারভীন আপাকে। উনিও শুনে কেঁদে ফেললেন, বললেন, দাদা, দুয়া কর তোমার নির্দেশ যেন আমি পালন করতে পারি। পরদিন সকালে ১৭ই রামাদানে আমাকে মেসেজ দিয়ে বললেন, তোমার নির্দেশ মত ঐ বিধবা ও ইয়াতিমদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে এসেছি, ও তে ওদের ঈদ হবে ইন শা আল্লাহ। আমি পরে খবর নিয়ে দেখলাম ঐ বছর পারভীনের ঈদ গেছে নতূন কাপড় বিহীন, এবং আনন্দহীন। তবে বুক ভরা তৃপ্তি তার, দ্বীনি কাজ করতে যেয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়া মাজলুমদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছেন তিনি।
গত পরশুদিন দুলা ভাইয়ের কাছে ফোন করলাম। বললাম, আমার আপু কেমন আছেন? ভাই খুব শক্ত মানুষ। কিন্তু ডুকরে কেঁদে উঠলেন। বললেন, আব্দুস সালাম ভাই, ও মরে গেলে আমার ক্ষতি হবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে শত গরীব মিসকীনদের, যাদের চোখ থাকতো পারভীনের মুখের দিকে আটকানো। কখন পারভীন তাদের হাতে কিছু না কিছু দেবেন।
আম্ফানে আমাদের সাতক্ষীরা মারাত্মক পর্যুদস্ত হয়। আমার ছোট ভাই প্রফেসর আব্দুস সামাদ জানালো ভাইয়া ঢাকা থেকে পারভীন আপা পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। এরপরে সারোয়ার ও জানালো পারভীন আপা আরো পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। আমি তাকে ফোন দিলাম। বললাম, তোমার অর্থনৈতিক অবস্থা আমি জানি। এত টাকা কোত্থেকে দিলে? দুলাভাইকে জ্বালাচ্ছো না তো। বললেন, দাদা, চিন্তা করোনা। আমেরিকা থেকে ইয়াসমিন আপা (আমার স্মৃতিতে নামটা ভুল হতেও পারে) ঈদ উপলক্ষ্যে কাপড় কিনতে টাকা দিয়েছিলেন উপহার হিসেবে। সাতক্ষীরার ভাই বোনদের এই কষ্ট দেখে আমি আর কাপড় চোপড় কিনলাম না। আমি অভিভূত হলাম।
সন্তানদের জন্য তার মায়া ছিলো অবিস্মরণীয়, ও অবর্ণনীয়। অনেক অনেক বার আমাকে তার সন্তানদের ব্যাপারে পরামর্শ চেয়েছেন। এক্ষেত্রে আমার কথা তিনি দুলাভায়ের সাথে পরামর্শ করে মেনে নেয়ার চেষ্টা করতেন। গত আগস্টের ১৭/১৮ এর দিকে ও আমাকে জ্রুরি তলব পাঠায়। তার ছেলে লিখনের কভিড১৯। মারাত্মক অবস্থা। তিনি দেখা করতে চান। কিন্তু দুলা ভাই নিষেধ করতেছেন। তিনি আমার সাথে কথা বললেন। বললেন, জীবনে তোমার দুলা ভাইয়ের মতের বাইরে যাইনি। কিন্তু ছেলেকে না দেখে পারছিনা। তুমি বলো, আমি যদি তার বিনা অনুমতিতে ছেলেকে দেখতে যাই গুনাহ হবে কিনা। আমি বললাম, হাঁ, গুনাহ হবে। এটা মারাত্মক গুনাহ। কারণ তোমার শরীরের যে অবস্থা তাতে এই ভাইরাসের কোপ সহ্য করা কঠিন হবে। দুলা ভাইয়ের কথা মেনে নাও।
গত ১০ বছরে এইবারই দেখলাম পারভীন আপা আমার পরামর্শ মানেন নি। কিংবা দুলাভায়ের নিষেধাজ্ঞাও কানে নেন নি। তিনি কোভিড ১৯ আক্রান্ত ছেলের কাছে গেছেন, জড়িয়ে ধরেছেন এবং আল্লাহর ফায়সালাতে এই মারাত্মক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখানেই হয়েছে মাতৃস্নেহের কাছে জীবনের মায়ার অদ্ভুত পরাজয়।
যেদিন তিনি হসপিটালে যাচ্ছেন, ওইদিন বললেন, দাদা, আমি হয়ত শেষ বারের মত যাচ্ছি হাসপাতালে। অনেক জ্বালায়েছি তোমাকে, ক্ষমা করে দিও। তোমার লেখা জান্নাতি রমণীদের মত যেন হয় আমার মরণ, আর শাহাদাতের মর্যাদা যেন হয় তার দুয়া করিও। আমার সন্তানদের দিকে একটু নযর রেখ। আর ফয়সলকে বলেছি তোমাকে আমার খবর যেন দেয়। তুমি শায়খ আব্দুল কাইয়্যুমকে একটু জানায়ো। আর আমার ফেইসবুকটা হয় তুমি চালায়ো, না হয় ডিএক্টিভেট করে দিও।
আমি শুধু এতটুকুই বলতে পারলাম, আপু তুমি মোটেও দুশ্চিন্তা করোনা। আবার তুমি ফিরে আসবে ইন শা আল্লাহ। আমি দুয়া করছি। আমার আম্মা ও ভাইবোন সবাই তোমার জন্য দুয়া করবে।
আজ ফেইসবুক পাড়ায় তার মৃত্যু খবর প্রকাশ পেয়েছে। ফয়সল ও আমাকে জানায়েছে আগে। খুব কষ্ট পাচ্ছি আপু চলে যাওয়ায়। দ্বীনের পথে একজন রাহী বাংলাদেশে থেকেও যে এমন হয় আগে কোনদিন শুনিনি। তার হাতে ইসলাম মানার জযবাহ পেয়েছেন হাজারো বোন, তার লেখায় ঋদ্ধ হয়েছে হাজারো পাঠক মন। দুয়া করি এই ক্ষণজন্মা মহিয়ষী বোনকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিন, এবং শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। মায়ের পেটের বোন না হয়েও যে এমন আপন কেও হতে পারে, তা তার সংস্পর্শে না এলে বুঝতাম না। আমার বাসায় আম্মা একজন মেয়ে হারানোর, ও ভাইবোন সবাই একজন বোন হারানোর বেদনায় কাতর হয়েছেন। আমার দুলাভাই এডভোকেট গিয়াস উদ্দীন মিঠুকে ও বাচ্চাদেরকে আল্লাহ সবর ইখতিয়ার করার তাওফীক দিন। অসুস্থ লিখনকে আল্লাহ সুস্থ করে দিন। সবাইকে তার জন্য দুয়া করবেন এই অনুরোধ।
ড. এম. আব্দুস সালামী আযাদীর টাইম লাইন থেকে

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

গ্রাম্য আদালতের কার্যকারিতা আরো বাড়াতে হবে: শাহ্ নুসরাত জাহান

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ রূপগঞ্জ উপজেলার মাসিক আইন-শৃখলা কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, গ্রাম্য আদালতের কার্যকারিতা আরো বাড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, এলাকা থেকে প্রতিদিন উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে প্রচুর অভিযোগ আসে ভিক্টিমরা। আমরা চেষ্টা করি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের। 

১৪ সেপ্টেম্বর(সোমবার) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলার মাসিক আইন-শৃখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় রূপগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা এইচ. এম জসিম উদ্দিনসহ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় মাদকদ্রব্য বিক্রয় ও সেবন, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, বাল্য বিবাহ, যৌতুক, ইভটিজিং ও আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া দূর্গাপূজা ও দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইন-শৃংখলার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। 

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী  অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের হামলার ঘটনায় সরকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিরাপত্তা ব্যবস্তা বাড়ানোয়; উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। 

সৌজন্যেঃ সংবাদ চর্চা

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

গোপন আমল ✍মল্লিক মাহমুদ

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ একটি আরবি গানকে বাংলায় কাব্যানুবাদ করার চেষ্টা করলাম।মন্তব্য ও পরামর্শ প্রত্যাশী....

বন্ধু তোমার এমন কী কোনো
গোপন আমল আছে?
যা কিছু কখনো হয় নি প্রকাশ
কোনো মানুষের কাছে।
জানো শুধু তুমি এবং জানেন
তোমার মহান রব—
সবার সকল খবর জানাটা
যার কাছে সম্ভব।।
জীবনে কখনো করেছো কী তুমি
এমন সাদাকা-দান,
যা কেউ জানে না কেবল জানেন
আল্লাহু সুবহান।
যার করুণায় খেয়ে-পরে বাঁচে
এই পৃথিবীর সব।।
মধুময় কোনো গল্প আছে কী
হিসেবের সে খাতায়,
প্রভূর সামনে বলবে যা খুলে
জান্নাতী দরোজায়।
যেখানে ফুলের সৌরভ আর
পাখিদের কলরব।।
.
২৮।০৮।২০

ফজরে উঠবেন যেভাবে

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আপনি কিভাবে ফজরে উঠেন? আমি কিন্তু একদিন বা দুইদিন ফজরে উঠার কথা বলছি না। বরং আমি বলছি আপনি কিভাবে প্রতিদিন, কোনোদিন মিস না করেই নিয়মিত ফজরে উঠেন?


অনলাইনে ভুরি ভুরি ওয়েবসাইট আপনাকে সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগার টিপস ও উপদেশ নিয়ে বসে আছে। কিন্তু আমাদের আজকের এ আলোচনার ফোকাস কিন্তু দুনিয়াবি টিপস দেয়া না, আমাদের ফোকাস হল ফজরে উঠার আধ্যাত্মিক কলা-কৌশল নিয়ে আলোচনা করা।

প্রতিদিন আপনি কমপক্ষে ১৭ বার সূরা ফাতিহা পাঠ করেন। আপনি তিলাওয়াত করেন, “আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি, আর আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি”। আপনি আল্লাহর ইবাদত করতে চান?- “হ্যা!” তবে আপনার প্রয়োজন আল্লাহর সাহায্য। আপনি ফজরে উঠতে চান? – “হ্যা, অবশ্যই।” এক্ষেত্রেও আপনার আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। আপনি কোনোভাবেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ফজরে উঠতে পারবেন না। আমি আবারো বলছি, আপনি পারবেন না। এখন নিজেকে প্রশ্ন করুন, আমি সত্যিই ফজরে উঠতে চাই- তা আল্লাহর নিকট উপস্থাপন করতে আমি কি করতে পারি?

আপনার কি এমন দিন গেছে যে আপনি ঘুমাতে যাচ্ছেন আর গভীরভাবে অনুভব করছেন যে আপনি অবশ্যই ফজরে উঠবেন? এবং আপনার কি এমন দিন গেছে যেদিন আপনি নিশ্চিত ছিলেন আপনি অতিরিক্ত ঘুমাবেন? এ দুটি দৃশ্য কল্পনা করুন। আমি নিশ্চিত, আমাদের কেউ কেউ এমন অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে গিয়েছেন:

◾দৃশ্য এক◾
আপনার ঈমান খুব বেশি আজ। রাতে আপনি এশা ও বিতর নামায পড়েলেন। কিছি সময় ধরে তিলাওয়াত করলেন পবিত্র কুরান। দেখা গেল, ফজর পর্যন্ত ঘুমানোর সময় আছে আর মাত্র ২ ঘন্টা। আপনি নিশ্চিত যে আপনি ফজরে উঠবেন কারণ, আপনি নিজের মন ঠিক করে নিয়েছেন। আসলে কখনো কখনো আপনি মাঝরাতে না ঘুমিয়ে হাটাচলা করতে থাকেন। আপনি ভাবেন, একটু পরই ফজর শুরু হবে, ঘুমিয়ে গেলেই নামাজ মিস হবে। আচ্ছা, আপনার যদি এমনটা করার অভিজ্ঞতা না থাকে তবে ওই দিনের কথা মনে করুন, যেদিন খুব ভোরে আপনার বিমান, বাস বা ট্রেইনে উঠার কথা ছিল। আপনি চিন্তা করুন, আপনার শরীর, মন ও মস্তিষ্ক সেদিন কেমন ‘সুইচ অন’ ছিল। আপনি সেদিন কতসময় ঘুমিয়েছেন তাতে কিছু আসে যায় না, আপনি জেগে উঠেছিলেন।

◾দৃশ্য দুই◾
আবার এমন দিনও আছে যেদিন আপনি আসলে ঘুমে ডুবে থাকতে চান, উঠতে চান না। আপনি মনে মনে আশা করেন ‘অতিরিক্ত ঘুম’ হোক আজ, যাতে আপনি ফজরে না উঠলে নিজেকে কম দোষী ভাবতে পারেন। আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন, কিন্তু আপনি জেগে যান। এলার্মের শব্দের সাথে যুদ্ধ শুরু হয় এবং শুরু হয় শয়তানের সেই পুরোনো কৌশল, “এই তো, আর পাঁচ মিনিট”…!

প্রতিদিন আমরা কিভাবে ‘দৃশ্য এক’ মেইনটেইন করব?
উপরের দুটি দৃশ্যের একটিতে আপনি হৃদয়ের গভীর থেকে অনুভব করেন, আপনি অবশ্যই ভোরে জেগে উঠবেন। আর অন্যটিতে আপনি হৃদয়ের গভীরে এমন মনোভাব রাখেন, আপনি আসলে ঘুম থেকে উঠতে চান না। আপনি ভোরে উঠার ক্ষেত্রে শয়তানের যে বাধা, সেটির সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত নন।
নিচে আমরা কিছু বাস্তব ও আধ্যাত্মিক উপায়ের কথা বলব, যেগুলো আপনাকে ‘দৃশ্য এক’ বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করবে অর্থাৎ ফজরে জাগ্রত হতে সাহায্য করবে, ইন শা আল্লাহ…

◾ফজরে উঠার আধ্যাত্মিক কলা-কৌশল◾

◾
আল্লাহকে জানুন: এটা ফজরে জাগার মূল ও এক নম্বর অস্ত্র। আপনি যদি জানেন যে আপনি কার ইবাদত করছেন, এবং আপনি জানেন যে তিনি আপনাকে ভোরে উঠে তার উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করতে বলেছেন; তবে আপনি উঠে পড়বেন। এটা আমাদের কমতি যে আমরা আল্লাহকে চিনতে পারি নি, ফলে আমরা সর্বদাই ‘দৃশ্য দুই’ এর মধ্যে নিপতিত হই (ভোরে/ফজরে উঠতে পারি না)। এজন্য আপনার করণীয়, আপনার রবকে জানুন, এটাই প্রধানতম উপায়।

◾
আন্তরিক হোন: ফজরে উঠার ব্যাপারে অন্তরিক মনোভাব লালন করুন। কেবল নিজেকে এটা বললেই হবে না- “ইন শা আল্লাহ, ফজরে উঠলে তো ভালই হয়!” ফজরে উঠা নিয়ে আন্তরিক হোন, দৃঢ় নিয়ত রেখে বলুন- “আমি ফজরে উঠব, কিভাবে উঠব জানি না, তবে অবশ্যই উঠব”। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমনটি বলাতে উপকার পেয়েছি।

◾
ঘুমানোর পূর্বে ওযু করুন: ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ইরশাদ করেন,
“এ অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো ধৌত পবিত্র কর, আল্লাহও তোমাদের পবিত্র করবেন। যে বান্দা পবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে যায়, একজন ফেরেশতা তার সাথে রাতে অবস্থান করে। যতবার বান্দা এপাশ ওপাশ করে, ফেরেশতা ততবার বলে, ‘হে আল্লাহ! আপনার এ বান্দাকে আপনি ক্ষমা করুন, কেননা সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছে।”
আপনার কি মনে হয়, যে বান্দার জন্য ফেরেশতারা এমন দু'আ করে, সে বান্দা কি অতিরিক্ত ঘুমাতে পারে, এবং ফজর মিস করতে পারে?

◾বিতরের নামায ও দু'আ: বিতর নামায পড়ে ঘুমানো নিশ্চিত করুন। বিতরের সালাতে মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যাতে তিনি আপনাকে ফজরে উঠতে সাহায্য করেন। মনে রাখবেন, আমরা প্রতিনিয়তই তিলাওয়াত করি, “আমরা তোমারই ইবাদত করি, এবং তোমারই নিকট সাহায্য চাই।”

◾
পবিত্র কুরআন থেকে কিছু অংশ তিলাওয়াত করুন: মহা পবিত্র কুরানের আয়াত পাঠের মাধ্যমে আপনার দিনের সমাপ্তি সালাতের জন্য জাগ্রত হওয়ার ফোকাস নিশ্চিত করে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ঘুমানোর পূর্বে সূরা আস-সাজদাহ ও সূরা আল-মুলক তিলাওয়াতের উপদেশ দিয়েছেন।

◾
ঘুমানোর পূর্বে আল্লাহর যিকর: এ বিষয়টির কথা আমি প্রথমেই বলেছিলাম। ঘুমানোর পূর্বে যতরকম মাসনূন দু'আ আছে, সেগুলো আপনি খুব সহজেই জানতে পারেন। প্রথম দিকে হয়ত আপনাকে প্রিন্ট করা পেইজ দেখে দেখে এগুলো পড়তে হবে, কিন্তু এভাবে এক-দুই সপ্তাহ চললে এ দু'আগুলো আপনার পুরোপুরি মুখস্ত হয়ে যাওয়াই উচিত। আপনার কাজ শুধু চোখ বুজার আগে এগুলো পাঠ করা।

◾
ফজরের নামায আদায়ের পুরস্কারসমূহের কথা মনে করুন: ফজরের নামায পড়লে আপনি মুনাফিক হওয়া থেকে বেচে থাকবেন। বিচার দিবসে নূরের জ্যোতি লাভ করবেন। পুরোদিন মহান আল্লাহর নিরাপত্তার চাদরে আবৃত থাকবেন। ফজর নামায আদায়ে আমাদের মধ্য হতে অলসতা দূর হবে, আমরা প্রোডাক্টিভ হয়ে উঠব- ঘুমানোর সময় ফজর নামাযের এসব পুরস্কারের কথা স্মরণ করুন, আশা করাযায়, আপনি অবশ্যই ফজরে উঠে পড়বেন।

◾ফজরে উঠার অন্যান্য কলা-কৌশল◾

◾
বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের বলুন আপনাকে জাগিয়ে দিতে: এটা ফজরে উঠার এক নম্বর রুল। পরিবারের একজন সদস্য, বন্ধু বা স্ত্রীকে জাগিয়ে দিতে বলুন। আপনারা এক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করুন। আপনি যদি তাদের আগে উঠে পড়েন, তাহলে স্বার্থপর না হয়ে তাদের উঠাও নিশ্চিত করুন।

◾
১.৫ আওয়ার স্লিপ রুল: হ্যা… একটি গোপন কৌশল, স্লিপ সাইন্সের এ থিউরি বলে,প্রতিটি মানুষ ১.৫ ঘন্টায় পুরো একটি ‘স্লিপ সাইকেল’ পূর্ণ করে। অতএব, আপনি বহু ১.৫ ঘন্টা পর জাগ্রত হতে পারবেন (যেমন ১.৫ ঘন্টা পর, ৩ ঘন্টা পর, বা ৪.৫ ঘন্টা পর। এমন ১.৫ ঘন্টার সাইকেল মেনে ঘুম থেকে জাগ্রত হলে আপনি সতেজ ও উজ্জীবিত বোধ করবেন। অন্যথায়, আপনি অলস অবস্থায় জাগ্রত হবেন। ফলে যদি ফজরের সময় থাকে ভোর ৫ টায়, আর আপনি ১২ টায় ঘুমাতে যান তবে আপনি ৪ টা ৩০ মিনিটে এলার্ম দিন। কারণ, এভাবে আপনি ৪.৫ ঘন্টা ঘুমানোর সুযোগ পাচ্ছেন অর্থাৎ স্লিপ সাইকেল পূর্ণ হচ্ছে, ফলে আপনার ঘুম থেকে উঠা সহজ হবে। (আর অবশ্যই, যদি আপনার ঘুমাতেই লেগে যায় ১.৫ ঘন্টা, তবে সময়ের হিসাব সে অনুযায়ীই ঠিক করবেন।)

◾
সন্ধায় হালকা ঘুম: এটা আরেকটি লাইফ হ্যাক, যা সুন্নাহ ও বিভিন্ন বিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া। তা হল, নিশ্চিত করুন, আপনার এই একটু ঘুমের পরিমাণ যেন মাত্র ২০ মিনিটের হয়। হ্যা, মাত্র ২০ মিনিট! বিশ্বাস করুন, বিগত ৩ বছর ধরে আমি সন্ধ্যাহ এ ২০ মিনিট ঘুমাই। আর কখনোই এটি আমাকে উজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হয় নি। আপনার যদি এই সময়টুকু ঘুমানোতে প্রশিক্ষণ নিতে চান, তবে pzizz ডট com ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পরামর্শ দিচ্ছি। এই অসাধারণ সফটওয়্যারটি আপনাকে এই স্বল্প সময় ঘুমানোর প্রশিক্ষণ দিবে। আমি নিজেও এখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছি।

◾
নিজেকে ট্রিট দিন: আমি একজন ব্রেকফাস্ট পাগল মানুষ। তো যদি আম সকালে উঠতে পারি, আমি ব্রেকফাস্টে বিশাল খাবারের আয়োজন করি। কখনো কখনো আমি এ ব্রেকফাস্টের জন্য আগের দিন সন্ধ্যা থেকে মুখিয়ে থাকি। ফজরে উঠার ছোট্ট পুরস্কার হিসেবে সকালের বিশাল ব্রেকফাস্ট ভক্ষণ করে নিজেকে ট্রিট দিন। এটি আপনার দিনকে সুষম রাখবে, ইন শা আল্লাহ!

ফজরে ঘুম থেকে উঠার ব্যাপারে আমার কাছে থাকা পরামর্শ এগুলোই। আপনার কাছে ফজরে উঠার অন্য কোনো কলা-কৌশল থাকলে আমাদের জানান.....

______________________________
ফজরে উঠবেন যেভাবে
______________________________
✍️মূল: মোহাম্মদ ফারিস
📜অনুবাদ: মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ

বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

এসো ভয়কে জয় করি = আবদুন নূর

 

০৯/০৯/২০২০ বাংলাদেশ বার্তা ডেস্ক:

যদি তোমার কাজল চোখে
আমার ছবি রয়,
রাতের বেলায় স্বপন দেখে
পাবে না মেটেই ভয়।
যদি তোমার পায়ে পায়ে
হাঁটার সুযোগ হয়,
চারটি পায়ের তালে তালে
রইবে কি আর ভয়?
যদি তুমি-আমি দুই জন
দুইটি ছায়া রয়,
চারটি মানুষ থাকলে পরে
কেমনে জাগে ভয়?
ভয় কাটলে সাহস বাড়ে
তাহা তো মিথ্যা নয়,
চল আমরা একজোট হই
ভয়কে করি জয়।

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

নিশ্চয়ই চিন্তাশীলদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে"

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাসায় ৪টা সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। এই লকডাউনে বাসায় বসে সিসিটিভিতে রাস্তায় মানুষের আনাগোনা দেখি। কিছুদিন ধরে আমার চিন্তার জগতে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কারণ আমার পবিত্র ধর্মগ্রন্থে মহাপবিত্র স্রষ্টা বারংবার বলেছেন...

"নিশ্চয়ই চিন্তাশীলদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে"
এই বাক্য অনেকবার পড়েছি, কিন্তু কখনো এতো গভীরভাবে ভেবে দেখিনি। গত ক'দিন ধরে কিছু বিষয় নিয়ে ভাবছি। যেমন-
১. যে সিসিটিভিতে আমি রাস্তার মানুষের কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করছি, তা এই পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদান দিয়েই তৈরী। তাহলে কি এমন কোন মহাশক্তিধর সিসিটিভি আছে, যা সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড পর্যবেক্ষণ করছে?
"নিশ্চয়ই তিনি সব দেখেন"
২. আমি আমার এক মৃত বন্ধুর বিয়ের ডিভিডি খুব আবেগ নিয়ে দেখছিলাম। সে নাই, কিন্তু তার অতীত কর্মকাণ্ড দেখতে পাচ্ছি। সেই আবেগ পরক্ষণেই ভয়ে পরিণত হল, যখন ভাবলাম, এমন কোন মহাশক্তিশালী ডিভিডি কি থাকা সম্ভব যা সমগ্র সৃষ্টির কার্যাবলী রেকর্ড করছে। আর সেটা পরে প্লে করা হবে?
"সেদিন সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়বে
তোমার পালনকর্তার আদেশ অনুযায়ী "
৩. মা যখন বাচ্চা প্রসব করে, তখন সেই বাচ্চার পুষ্টিগুণ অনুযায়ী মায়ের বুকে দুধই কেন আসে? কোকাকোলা,স্প্রাইট, বিয়ার কেন আসেনা? কার পরিকল্পনা? মাথা কাজ করেনা রে ভাই।
"মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই দুর্বল"
৪. পৃথিবীতে আমাকে জিজ্ঞেস করে পাঠানো হয়নি, আবার আমাকে বিদায়ও নিতে হবে আমার ইচ্ছা ছাড়াই। কেন? কার ইচ্ছামত পৃথিবীতে আসলাম আর বিদায় নিব?
" বলুন,আমি আশ্রয় নিচ্ছি মানুষের পালনকর্তার কাছে, মানুষের অধিপতির কাছে, মানুষের প্রকৃত মাবুদের কাছে"
৫. বৃষ্টির পানি টাক মাথায় পড়লে চুল গজায়না, কিন্তু মৃত জমিতে পড়লে ঠিকই হরেকরকম ফসল জন্মে। কি আছে এতে? কার নির্দেশে এমন হয়?
"আর যিনি আসমান থেকে পরিমিতভাবে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা আমি মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করি। এভাবেই তোমাদেরকে বের করা হবে"
৬. উট তার উদরে পানি ধরে রাখতে পারে, যা মরুভূমিতে প্রয়োজনমতো কাজে লাগায়। মানুষ কেন পারেনা? উটকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করলো কে? মাথা কাজ করেনা।
"তারা উটের দিকে কি তাকিয়ে দেখেনা,
যে কিভাবে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে"
৭. সমুদ্রের অনেক গভীরে যেখানে সূর্যালোক প্রবেশ করতে পারেনা, সেখানে কিছু মাছ আছে যাদের শরীরে বিদ্যুৎ তথা আলো তৈরী হয়। এত গভীরে পানির চাপেও তারা মারা যায়না, অথচ এই চাপে লোহাও বেকে যায়। কে এদের এভাবে সৃষ্টি করলো?
"তিনি যা ইচ্ছা তাই সৃষ্টি করেন"
৮. মানুষের এক জিহবা এতো স্বাদ কিভাবে বুঝে? কে প্রোগ্রাম করলো? কেমনে সম্ভব??
৯. খাদ্যহজম প্রক্রিয়া এতো নিখুঁত কিভাবে?যেমন, শর্করা হয় মুখবিবরে, এর জন্য আলাদা এনজাইম, আবার আমিষ হয় পাকস্থলীতে, তার জন্য আলাদা এনজাইম? আবার ফিল্টার হিসেবে কিডনি, অপাচ্য নির্গমনের পথ..কে সেই মহা বিজ্ঞানময় সত্ত্বা!! ইশারা কি বুঝেন??
১০. মানুষের শ্রবণ ও দর্শন মেকানিজম যে কি জটিল তা ভাবা যায়না। কে এতো নিখুঁতভাবে ডিজাইন করলো??
১১. বিজ্ঞান শুধু দুটো প্রশ্ন নিয়ে কাজ করে। কি এবং কিভাবে? কেন'র কোন উত্তর বিজ্ঞানের কাছে নেই। যেমন,কি হল? ভূমিকম্প..কিভাবে হল? টেক্টোনিক প্লেটের সঞ্চালনের কারণে। টেক্টোনিক প্লেট কেন সরে গেল? উত্তর নাই।
এভাবে আরো অনেক বিষয় আছে চিন্তা করার, যা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়-
ALLAH is the only explanation of all physical phenomena in this universe..
"আমিই তোমাদের সৃষ্টি করেছি.
তারপরও তোমরা কেন বিশ্বাস করছ না? "
(সংগৃহীত)

শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মাওলানা এম,আজীজুল হকঃ প্রোজ্জ্বল এক প্রতিভা।

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ একজন ভাল শিক্ষক হওয়া খুব সহজ কাজ নয়। মৌলিক বিষয় গুলোতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি ভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা চাই, যা দেখে ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে অনুসরণ করবে। একজন আদর্শ শিক্ষক তিনিই, যাঁর শিক্ষা ও স্মৃতি দীর্ঘকাল শিক্ষার্থীর মনে গেঁথে থাকে।

এদিক থেকে একজন শিক্ষক তাঁর ছাত্রদের কাছে সত্যিকারের অতিমানব, যাঁর থাকে সহজেই আকৃষ্ট করার ক্ষমতা। সেটা হতে পারে তাঁর জ্ঞানের গভীরতা, পঠনপদ্ধতি সুখময় করার দক্ষতা, সূক্ষ্মানুধাবন করার ক্ষমতা, আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি, মার্জিত রুচিবোধ, পোশাক পরিচ্ছেদ, ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্ব। শিক্ষক যখন তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুসরনীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত হবে তখন তাদের শেখার ইচ্ছাটাও আরও বেড়ে যায়। এমন একজন শিক্ষকের জ্যান্ত উদাহরন হচ্ছেন, চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসার ইতিহাস-ঐতিহ্যের গর্বিত ধারক-বাহক " মাওলানা এম, আজীজুল হক", যিনি আজীজ হুজুর নামে দীর্ঘ ৩০/৩৫ বছর পরও চুনতি মাদ্রাসার তখনকার ছাত্রদের হৃদয়ের মণিকোটায় দেদীপ্যমান হয়ে আছেন বিশেষভাবে।

ইলমে হাদিস, তাফসির, ফিকহ, আদব (আরবী সাহিত্য), নাহব (আরবি ব্যাকরণ), আকায়েদ, বালাগাত (আরবি ভাষালঙ্কার), মানতিক (যুক্তিবিদ্যা), ফালসাফা (দর্শন), ইসলামের ইতিহাস, বাংলা ও ইংরেজী সাহিত্যে সমান পাণ্ডিত্যের অধিকারী মাওলানা এম, আজীজুল হক। বিস্ময়কর প্রতিভাধর এই শিক্ষাগুরু আরবী, উর্দু, ফারসি, ইংরেজী ভাষায় অনর্গল পাঠদান ও বক্তৃতায় সমান পারদর্শী। ক্ষুরধার লেখনির একজন মেধাবী কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক হিসেবে তিনি নব্বাই'র দশকের শুরুতে দেশব্যাপী বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এসময় বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রকাশিত তাঁর গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা সুধী মহলের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগায়। বাংলা একাডেমি'র আয়োজনে জাতীয় রচনা প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে তিনি সেরা প্রতিযোগী নির্বাচিত হয়েছিলেন। কাদিয়ানী ফেতনার স্বরূপ নিয়ে তাঁর সারগর্ভ লেখার বিরুদ্ধে কাদিয়ানীরা হাইকোর্টে মামলা পর্যন্ত করেছিল।

আমার পরম সৌভাগ্য, চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসায় আজীজ হুজুরের ছাত্রাবস্থা থেকে শিক্ষকতা জীবনের প্রায় বার বৎসরের (আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক প্রফেসর ড. আ.ক.ম আবদুল কাদের সাহেবের ১৯৮৭ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত প্রিন্সিপাল পদে দায়িত্ব পালনের পূর্বে এবং পরে ১৯৯২ ইং পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনসহ) সোনালী অধ্যয়ের দশ বৎসেরের সাক্ষী আমি। ১৯৭৯ সালে কামিল শ্রেণীতে ভর্তি হয়েই মাদ্রাসার সেরা মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচয় লাভ করেন তিনি। ১৯৮০ সালে কামিল পরীক্ষায় ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসার সুনাম-খ্যাতি জাতীয় পর্যায়ে সমুন্নত করেন। ঐ বৎসর জাতীয় পর্যায়ে সেরা মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমন্ত্রণে হিজবুল বাহারে নৌবিহারে অংশগ্রহনের সুযোগ লাভ করেন। কামিলের রেজাল্টের পরপরই আশেকে রাসুল (সাঃ) হযরত শাহ হাফেজ আহমদ (রাহঃ) প্রকাশ শাহ সাহেব কেবলা ও মাদ্রাসার সিনিয়র উস্তাজদের ইচ্ছায় আজীজ হুজুর মুহাদ্দিস হিসেবে শিক্ষকতায় যোগ দেন। তিনি এমন একসময়ে শিক্ষকতায় যোগ দেন যখন চুনতি মাদ্রাসায় শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন জাতীয় পর্যায়ে একাধিকবার শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হিসেবে নির্বাচিত আল্লামা আবদুল হাই নিজামী, শায়খুল হাদিস আল্লামা মোহাম্মদ আমিন (রাহঃ), আল্লামা আবদুর রশিদ (রাহঃ), আল্লামা কামাল উদ্দিন মুছা খতিবী (রাহঃ), ইলমে নাহাবের ইমামখ্যাত আল্লামা মোহাম্মদ কাসেম (রাহঃ) থেকে শুরু এমন সব বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী যাঁরা সমহিমায় ছিলেন মহিমান্বিত। একই পরিবেশে বেড়ে উঠেও আল্লামা আজীজুল হক হুজুরের মাঝে ব্যতিক্রমীধর্মী আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটে বিস্ময়কর ভাবে। চিরাচ‌রিত কায়দায় অন্য দশজন যে জি‌নিস‌টি‌কে দে‌খতেন এবং ভা‌বতেন, সেই দেখা ও ভাবনায় তিনি তুলনাহীন মেধা ও সৃজনশীল মন‌নের পরিচয় দি‌য়ে‌ছেন তাঁর কর্মমুখর জীব‌নের পর‌তে পর‌তে। একাধা‌রে তি‌নি একজন বিদগ্ধ আ‌লেম, মুহা‌দ্দিছ, মোফাচ্ছির, সাহিত্যিক, গ‌বেষক, সুলেখক, সুবক্তা ও প্র‌তিষ্ঠান প‌রিচালক।

আজীজ হুজুর ক্লাস নিতেন কামিল থেকে দাখিল শ্রেণী পর্যন্ত। অত্যন্ত মেধাবী, বুদ্ধিদীপ্ত, ব্যক্তিত্ববান, বিচক্ষণ, চৌকস ও মার্জিত রুচিবোধ সম্পন্ন লাজুক স্বভাবের তারুণ্যউদ্দীপ্ত সুদর্শন শিক্ষক হিসেবে তাঁর অসাধারন বাচনভঙ্গি, আকর্ষণীয় উপস্থাপন কৌশল, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানের গভীরতা ছাত্রদের মনে গভীর রেখাপাত করতো। বিষয় উপস্থাপনা ও ব্যাখার ক্ষেত্রে তাঁর অনুসন্ধিৎসু ও বিশ্লেষণধর্মী মনের উপস্থিতি ছিল বিশেষ লক্ষ্যনীয়। অভিমানী ও জেদী স্বভাবের এই শিক্ষাবিদ চলনে যেমন, বাক-ব্যবহারেও তেমন। কৃত্রিমতার খোলস তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি কখনো। পদ- পদবীর প্রতি ছিল ভীষণ অনীহা। চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা ও কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদ্রাসায় অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ক্লাসে তাঁর পাঠদানের দক্ষতা দেখে বিমোহিত-বিমুগ্ধ থাকতো ছাত্ররা। হুজুরের হস্তাক্ষর ছিল অসাধারন। কম্পিউটার প্রযুক্তির দুষ্প্রাপ্যতার ঐ সময়ে হুজুরের আরবী, বাংলা, উর্দু হস্তাক্ষরকে ছাপা অক্ষরের সাথে ফারাক করা মুশকিল ছিল। হুজুরের বাংলা ও জাদিদ আরবী হস্তাক্ষরের ঢং আর স্টাইল অনুকরণে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলতো ছাত্রদের মাঝে। ডিমাই, ডাবল ডিমাই সাইজে তৈরিকৃত অসাধারন ক্যালিগ্রাফিতে হুজুরের শৈল্পিক রুচিবোধের প্রকাশ পেতো। কবি ফররুখ আহমদের কবিতার কয়েকটি শ্লোক নিয়ে এই রকম দু'টি ক্যালিগ্রাফি হুজুর আমাকে উপহার দিয়েছিলেন, যা দীর্ঘদিন আমার পড়ার টেবিলের সামনে টাঙ্গিয়ে রেখেছিলাম। এককথায়, গতানুগতিকতার বিপরীতে সর্বক্ষেত্রে নিজস্ব স্টাইলের একটা ধারা তৈরি করতে সক্ষম হন তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ছাত্রদের কাছে আইডলে পরিণত হন। ছাত্রদের মাঝে একপ্রকার প্রতিযোগিতা শুরু হয় হুজুরের লাইফ স্টাইল অনুসরণ-অনুকরণে। বিশেষ করে আমরা যারা হোস্টেলে থাকতাম তারা হুজুরের ব্যতিক্রমধর্মী সম্বোধনাত্মক শব্দাবলী নিয়ে খুব মজা করতাম। খুব মনে পড়ছে মাওলানা আবদুল হাই নদভী (পীর সাহেব- বায়তুশ শরফ), অধ্যাপক ড. আবুল আলা মো. হোছামুদ্দিন (চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ- ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন), মাওলানা ছালাহুদ্দিন মোহাম্মদ বেলাল (বায়তুশ শরফের মরহুম পীর সাহেব শাহ মাওলানা কুতুব উদ্দিন (রাহঃ) এর একমাত্র সন্তান), সিলেটের ফারুক (লন্ডন প্রবাসী), মাওলানা মাহবুবুর রহমান (মরহুম মাওলানা ছাবের হেলালী রাহঃ'র ছোট ভাই)-সহ আমরা বেশ ক'জন বাল্যবন্ধুর সাথে হুজুরের অনেক মজার স্মৃতির কথা। বিশেষ করে হুজুরের বিয়ে উপলক্ষে কক্সবাজার খুরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে বিয়ের আগেরদিন সারারাত এবং বিয়ের দিন শ্বশুরালয়ে নানা স্মৃতির কথা কখনো ভুলবার নয়।

জানতে পারলাম হুজুর নাকি খুব শীঘ্রই কক্সবাজার হাশেমিয়া মাদ্রাসা থেকে অবসরে যাবেন। হুজুর রাজি থাকলে বিশেষ কোন পদ সৃষ্টি করে প্রাতিষ্ঠানিক সম্মানীতে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসায় আনার উদ্যোগ নিলে মাদ্রাসার সুনাম আর সুখ্যাতি বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আশা রাখি, বিষয়টি বর্তমান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি, আঞ্জুমনে তোলবায়ে সাবেক্বীন (প্রাক্তন ছাত্র সমিতি) গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় এনে সুচিন্তিত সিদ্ধান্তে উপনীত হবে।
পরিশেষে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি চবি'র আরবী বিভাগের প্রফেসর ড.শাজাআত উল্লাহ ফারুকীকে সপ্তাহ দু'য়েক পূর্বে আজীজ হুজুরের অসাধারন ছবিটি পাঠানোর জন্য। ছবিটি পাবার পর ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে হুজুর সম্পর্কে মূলতঃ কিছু লেখার প্রয়াস।
সংগৃহীত

আল্লাহর উপর ভরসা করে পরিশ্রম করুন। পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ করিম মিয়া প্রতিদিনই সাভার থেকে ৭০ কেজি দুধ এনে ধানমন্ডির বাসায় বাসায় দিয়ে যায়

সে ৪০ টাকা করে দুধ কিনলেও ঢাকায় এনে ৮০ টাকায় বিক্রি করে! দিনে ৩'শত টাকা খরচ বাদ দিলেও তার মাসে ৭৫ হাজার টাকার মত থাকে ক্যান ইউ ইম্যাজিন যে, একজন অশিক্ষিত লোক মাসে ৭৫ হাজার টাকা ইনকাম করছে??
তারেক সাহেব ১.৫ লক্ষ টাকা এ্যাডভান্স দিয়ে নিউ মার্কেটের দোতলায় একটি দোকানের সামনে বসার অনুমতি নিয়েছিলেন প্রায় ২১ বছর আগে মাসে ভাড়া দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। তিনি সেখানে বসে প্যান্ট শার্ট ছোট করা সহ টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করেন
এই ২১ বছর দর্জির কাজ করে সায়দাবাদ একটি ৫ তলা বাড়ি, রায়ের বাগ ৩ তলা বাড়ি, মালিবাগ হোসাফ টাওয়ারে দুইটা দোকান কিনেছেন; বাড়ি ভাড়া ও দোকান ভাড়া থেকে উনার মাসিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকা!
যখন জিজ্ঞেস করলাম, "দর্জির কাজ করে কত পান?"
উনি হেসে বললেন, "কখনো ৭০, কখনো ৮০, কখনো ৬০-ও হয়, তবে ৬০ হাজার খুব কমই হয়"
তিনি একজন দর্জি কিংবা মল চত্বরের ইগলুর আইসক্রিম বিক্রেতার কথাই ধরিনা কেনো আইসক্রিম খেতে গিয়ে জানলাম তার বাড়িও আমার জেলায়, আইসক্রিম বিক্রি করেই তিনি মোহাম্মদপুর ছয় তলা বাড়ি করেছেন, মাসে লাখ দেড়েক টাকা ভাড়াও আসে
এসব মানুষ তারা যাদেরকে উঠতে বসতে আমরা ঘৃণার চোখে দেখি, নিয়মিত ধমকও দেই; কিন্তু, ২৫ বছর পড়াশুনা করেও তাদের সমান বেতনের চাকরি ম্যানেজ করতে পারিনা
এসব লোক যেখানে পড়াশুনা না করেই উদ্যোক্তা হয়ে গেছে আমরা সেখানে পড়াশুনা করে অন্যের গোলামী করার সুযোগও পাইনা
ট্রাডিশনাল বিজনেসকে ঘৃণা করে ইনোভেটিব কিছু করতে চেয়ে আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমরা কোন স্টার্টআপই দাঁড় করাতে পারিনা; দিনশেষে আমাদের চাকরি খুঁজতে হয় আকিজ সাহেব কিংবা কাউছ মিয়ার জর্দার ফার্মে আমরা জর্দার ম্যানেজার হয়েই প্রাউড ফিল করি অথচ এই স্টার্ট আপ গুলো যদি তরুণ শিক্ষিতরা শুরু করতো, দেন??
হাসিব মিয়ার ক্ষমতা নাই ৭০ কেজির উপরে বিক্রি করার কিন্তু আমরা পারতাম এমন একশ হাসিব দিয়ে বিজনেসটা বড় করতে কিংবা একশত তারিককে ম্যানেজ করতে পারতাম, কারন আমাদের ম্যানেজারিয়াল অ্যাবিলিটি তাদের চেয়ে বেশি আমরা সেটা না করে মাল্টিন্যাশনালে জব করে গাধার মত খেটে হাজার পঞ্চাশেক টাকা পেয়েই খুশি;
আর মাস শেষে দর্জি তারেকের পাঁচতলার বাসা ভাড়া দেওয়ার টাকা নিয়ে ভাবি কিংবা, ছুটে বেড়াই দুধ/আইসক্রিম বিক্রেতার ছেলে/মেয়ের পেছনেই.....
সর্বশেষ বলতে চাই।আল্লাহর উপর ভরসা করে পরিশ্রম করুন।
পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি....
সংগৃহীত ...

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র শুভেচ্ছা.

  বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  প্রতিবছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। তাই এ দিন সকল কালিমা আর কলুষতাক...