* দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা*

ইসলামী ব্যাংক দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র * সকল প্রকার একাউন্ট খুলতে * * টাকা জমা করতে * টাকা উঠাতে * * বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স এর টাকা বোনাসসহ উঠাতে * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে আসুন। * * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা* * প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ 01711-458151* 01700-925241*

সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২১

“আমি শহিদ হতে চাইনা, বেঁচে থেকে অনেক কাজ করতে চাই” আহমদ তুতুঞ্জির বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত মূল্যায়নঃ মিজানুর রহমান

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ শহীদী কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের এবারের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে অতিথি ছিলেন ইফসু(IIFSO) সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ড. আহমদ তুতুনজি। তিনি এক জন উঁচু মানের সংগঠক। তিনি বিভিন্ন গবেষণা মূলক প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। শিবিরের সম্মেলনে তিনি সম্মানিত অতিথি হিসাবে অনলাইনে অংশগ্রহণ করে বলেছেন "আমি শহীদ হতে চাইনা, আমি বেঁচে থেকে অনেক কাজ করতে চাই।"

তিনি আরো সুন্দর সুন্দর নসিহত করেছেন, যা শিবিরের সাবেক বর্তমান শীর্ষ নেতাদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। একজন প্রবীন নেতা ও দায়ীর জ্ঞান গর্ব বক্তব্যে পুলকিত হবার রেওয়াজ আমাদের সংগঠনে নতুন নয়। একজন অতিথি তার বক্তব্যে ওনার অবস্থান, রুচি অনুযায়ী বক্তব্য রাখতেই পারেন।
অতিথিদের সকল বক্তব্য গ্রহনযোগ্য হতে পারে, আবার না ও হতে পারে। গ্রহণযোগ্য হলে জনশক্তিকে আমলের ব্যপারে উৎসাহিত করা হয়। গ্রহনযোগ্য না হলে চুপ থেকে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। এখন জনাব তুতুনজির এই বক্তব্যটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য? সাবেক ও বর্তমান নেতা কর্মীদের প্রচারের ধরণ দেখে জনাব তুতুনজীর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য বা অসাধারণ ভাবে মুল্যায়িত হয়েছে বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। জনাব তুতুনজি এমন একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে এই বক্তব্য রাখেন, যে সংগঠন শহীদি কাফেলা হিসেবে পরিচিত। শহীদ আব্দুল মালেক ভাই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শত শত সম্ভাবনাময় তরুণরা এ আন্দোলনের কাজ করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। আহত , পঙ্গু হয়েছেন হাজার হাজার নেতা- কর্মী। হামলা-মামলার স্বীকার হয়ে চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে এখনো ফেরারী জীবন যাপণ করছেন লাখ লাখ মানুষ। শহিদী কাফেলার অভিভাবক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর আমির থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের সকল নেতারা শহীদ হয়েছেন শুধু মিথ্যার কাছে আপোষহীন ভূমিকার কারণে। তাঁরা চাইলে পালিয়ে যেতে পারতেন। আপোষ করতে পারতেন। ক্ষমা চাইতে পারতেন। তা না করে শাহাদাতের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন।
এখন জনাব তুতুনজির কথা " আমি শহীদ হতে চাইনা" অনুযায়ী আমাদের নেতারা শহীদ হয়ে কি ভুল করেছেন? জনাব তুতুনজির বক্তব্যকে আমি গুরুত্ব না দিলে এই আলোচনা করতাম না। কারণ কতজন কত কথা বলবেন, সব কথা গুরুত্ব দিতে নেই বলে এড়িয়ে যেতে পারি। কিন্তু আমাদের কিছু ভাইয়েরা জনাব তুতুনজিদের এই যুগের রাহবার মনে করছেন। কিন্তু একজন রাহবার জনশক্তিকে সঠিক গাইডলাইন দিবেন সেটিই কাম্য। তা হলে জনাব তুতুনজি শহিদী কাফেলার সম্মেলনে এসে শাহাদাতের মত চরম এবং পরম কাম্য মৃত্যুর ব্যাপারে প্রকাশ্যে বলে গেলেন যে তিনি শহিদী মৃত্যু চান না। কথা হলো, শহীদি মৃত্যু সবার ভাগ্যে জোটে ও না। চাইলেই সবাই শহীদি মৃত্যু পায় না। সে জন্য আল্লাহর বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া লাগে। অনেকেই শহীদ হয়েছেন, আবার অনেকেই শাহাদাত চেয়েও পাননি। কে কোন মানের শহীদ আল্লাহই ভালো জানেন।
শাহাদাত এমন একটা বিষয় যার জন্য সরাসরি আল্লাহ তাআলাই উৎসাহিত করেছেন।
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلً
ইমানদারগণের মাঝে একদল এমন আছেন, যারা আল্লাহর সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছেন, তাদের মধ্য থেকে একদল যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে আল্লাহর কাছে চলে গিয়েছেন, অন্যদল শাহাদাতের অপেক্ষমাণ। তাঁরা তাঁদের সংকল্পে কোন পরিবর্তন আনেন নি।
সাহাবায়ে কিরাম, পরবর্তী মুজাহিদরা তাঁর উজ্জল দৃষ্টান্ত। অনেকে শহীদ হয়েছেন, আবার অনেকে সাধারণ মৃত্যু বরন করেছেন। হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ শাহাদাতের জন্য কত কান্নাকাটি করলেন, যুদ্ধ করলেন, কিন্তু তিনি সাধারণ মৃত্যুই পেলেন।
আমাদের ইসলামী ঐতিহ্য হলো শহীদি‌ মৃত্যু কামনা করা । কুরআন- হাদিসের সব জায়গায় শহীদি মৃত্যুর ব্যাপারে উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়া হয়েছে।
إن الله اشتري من المؤمنين أنفسهم وأموالهم بأن لهم الجنة، يقاتلون في سبيل الله فيقتلون ويقتلون
আল্লাহ মুমিন্দের জান মাল জান্নাতের বিনিময়ে খরিদ করে নিয়েছেন। তাঁরা আল্লাহর পথে লড়াই করতে গিয়ে জালিমদেরকে হত্যা করে, নিজেরাও শহীদ হয়।
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ولا تقولوا لمن يقتل في سبيل الله امواتا بل احياء ولكن لا تشعرون
আল্লাহর পথে যারা শহীদ হয়, তাদেরকে তোমরা মৃত বলনা, বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা উপলদ্ধি করতে পারো না।
এই ভাবে অনেক আয়াত আছে শাহাদাতের জন্য উৎসাহিত করে। হাদিসেও একই ভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।
والذي نفسي بيده وددت أني أقاتل في سبيل الله فأقتل ، ثم أحيا ثم أقتل ، ثم أحيا ثم أقتل ، ثم أحيا ثم أقتل ثم أحيا
রাসুল সাঃ নিজেই বলেছেন, সে আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, আমি আশা করি, আমি আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই, আবার জীবিত হই!
অন্য হাদিসে ও বলা‌ হয়েছে,
مَنْ مَاتَ وَلَمْ يَغْزُ وَلَمْ يُحَدِّثْ نَفْسَهُ بِهِ؛ مَاتَ عَلَى شُعْبَةٍ مِنْ نِفَاقٍ
যে মারা গেল, কোন লড়াই বা জিহাদ করলো না, নিজে জেহাদে অংশগ্রহণের ব্যপারে চিন্তাও করল না, সে যেন নিফাকের মৃত্যু গ্রহণ করলো।
এভাবে শত শত আয়াত – হাদিস আমাদের ভায়েরা কি কম জানেন ?
অনেকেই বলবেন, ওনি অধিক কৌশলী হয়ে কাজ করার কথা বলেছেন। জ্ঞান, হিকমাত অর্জনের কথা বলেছেন। শাহাদাতের বিরোধীতা করেননি। আমি ও তাই মনে করতে চাই। কারণ ওনার মত এতো বড় দায়ী শাহাদাতের মত পবিত্র, লোভনীয় মৃত্যুকে অবজ্ঞা করতে পারেন না।
কিন্তু আমি ওনাকে ইতোপূর্বে একবার ইস্তাম্বুলে ‌সাক্ষাত করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমাদের শীর্ষ নেতাদের একটি সফরে সঙ্গী হয়ে জনাব তুতুনজির সাথে কিছু সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল। সেই সময়ও তিনি আমাদের শীর্ষ নেতাদের একই নসিহত করেছিলেন। আমি আশ্চর্য হয়ে সে সময় ওনার নসিহত গুলোকে হজম করার চেষ্টা করেছিলাম। কারন তখনও তিনি , আমি শহীদ হতে চাইনা, অনেক কাজ করতে চাই" বলেছিলেন। সে দিন ও ওনার আলোচনা শুনে আমার মনে এই প্রশ্ন জেগেছিল যে, আমাদের বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা শহীদ হয়ে কি তাহলে ভুল করেছেন? বিদেশে পালিয়ে গিয়ে বেঁচে থাকলেই কি তাহলে ভালো করতেন?
আমার প্রশ্ন হলো,
فإذا جاء أجلهم لا يستأخرون ساعة ولا يستقدمون تفسير
আয়াতের অর্থানুযায়ী, কারো মৃত্যু ঘনিয়ে আসলে তিনি‌ কোন ধরনের আগে পর হওয়া ছাড়া মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবেন। এবং কার মৃত্যু কিভাবে হবে ব্যক্তি নির্ধারণ করতে পারে না। আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী কারো জীবন- মৃত্যু হয়। তাহলে আমাদের আমীরে জামায়াত সহ শহীদ হওয়া নেতারা কি নিজের ইচ্ছায় পালিয়ে যেতে পারতেন? পালিয়ে গেলেই কি তারা বেঁচে থাকার গ্যারান্টি পেতেন ? তা হলে জনাব তুতুনজির এই বক্তব্যের কি অর্থ দাঁড়ায়? বেঁচে থেকে অনেক কাজ করার কথা বলেছেন জনাব তুতুনজি। আমাদের শহীদ আমীরে জামায়াতসহ শহীদ হওয়া শীর্ষ নেতারা কি তাহলে কম কাজ করেছেন? আমার কাছে জনাব তুতুনজির বক্তব্য রহস্যজনক মনে হয়। উনি হয়ত উম্মাহর প্রয়োজনে বেঁচে থেকে গবেষক তৈরি করতে চান।
আল্লাহর দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে গবেষক যেমন প্রয়োজন, আবার সেই কাজের চ্যালেন্জ গ্রহণ করতে গিয়ে প্রয়োজনে আল্লাহর রাহে শাহাদাতের সূধাও পান করতে হয়। যুগে যুগে ইসলামের ইতিহাস আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। সেরা‌ গবেষক তো তারাই, যারা দ্বীনের প্রয়োজনে গবেষণার আরামদায়ক চেয়ার ছেড়ে ময়দানে গিয়ে শাহাদাতের সুধা ও পান করতে পারেন।
জনাব তুতুনজিরা আমার জানা মতে, ব্যাপক জ্ঞান গবেষণায় ব্যস্থ থাকেন।‌ বিশ্ব জোড়া খ্যাতি ওনাদের। কিন্তু ওনাকে আমি যতটুকু জানি, বিভিন্ন দেশে ইসলামী আন্দোলনের মুল দলগুলোর চাইতে ইসলামী আন্দোলনের দলছুট, সংস্কার পন্থীদের সাথেই ওনাদের ব্যাপক সখ্যতার প্রমান সেদিন ওনার নিজের বক্তব্য থেকে আন্দাজ করতে পেরেছিলাম।
আরব দেশ গুলোতে ইখওয়ানুল মুসলেমিন, তুর্কি- ইউরোপ- মধ্য এশিয়ায় মিল্লী গুরুশ আন্দোলন ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাবার পর, তা হলে কি ওনি ইসলামী আন্দোলনের সর্বশেষ ভার্সন জামায়াত শিবিরের মাঝে শাহাদাতের চেতনা বিমুখ, বুদ্ধি নির্ভর, লিবারেল, হয়ে গড়ে ওঠার ম্যাসেজ দিতে চাইলেন? জনাব তুতুঞ্জির বক্তব্যে একমত হয়ে আমাদের নেতারাও ওনার বক্তব্যকে স্যোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার করে সমর্থন জানালেন? আদর্শিক ভাবেওকি তাহলে আমরা আর শাহাদাতের চেতনা লালন করব না ? আমরা কি তাহলে শুধু মাত্র বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন হয়ে গেলাম? আমরা কি তাহলে আর শিবিরকে "শহীদি কাফেলা" বলবো না ? শহীদ পরিবারগুলোকে কি তাহলে আমরা ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকব? তুতুনজিদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী শিবির কি তাহলে লিবারেল, বুদ্ধিজীবী সংগঠন হয়ে যাবে?
04.01.2021

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র শুভেচ্ছা.

  বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  প্রতিবছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। তাই এ দিন সকল কালিমা আর কলুষতাক...