* দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা*

ইসলামী ব্যাংক দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র * সকল প্রকার একাউন্ট খুলতে * * টাকা জমা করতে * টাকা উঠাতে * * বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স এর টাকা বোনাসসহ উঠাতে * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে আসুন। * * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা* * প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ 01711-458151* 01700-925241*

শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০

এবার আশার খবর শোনালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেরেই চলেছে। আর েএই দুঃসংবাদের মাঝে আশার সংবাদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কোভিড-১৯ এর ৪টি ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস এডানম গ্যাব্রিয়াসাস বলেন, নরওয়ে এবং স্পেনে করোনা আক্রান্তদের ওপর শিগগিরই  ওষধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে। এরপর আরো ৪৫টি দেশে চালাবে। আগ্রহ দেখিয়েছে আরো অনেক দেশ। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, একা কোন দেশের পক্ষেই  কোভিড-১৯ মোকাবেলা করা সম্ভব না। এর জন্য সব দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এ সব কথা বলেন সংস্থাটির মহাপরিচালক।

বিশ্ব জুড়ে করোনায় আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের ১ জনই স্বাস্থ্যকর্মী। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করার সময় স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের  ৬ জন এবং মৃত প্রতি ১০ জনের ৭ জনই ইউরোপে।

সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ হাজারেরও বেশি। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬ লাখ ১ হাজার ৪৭৮ জন।

পূর্বকোণের সৌজন্যে

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশবাসীকে হোম-কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে হাতগুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই: ড.ইফতেখারুজ্জামান।

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ রোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশবাসীকে হোম-কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে হাতগুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি উদ্ভূত মহাসংকট মোকাবেলায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় কৌশল প্রণয়ন, জিডিপির অন্তত ১০ শতাংশের সমপরিমাণ বিশেষ তহবিল গঠন এবং এই কৌশল বাস্তবায়ন ও তহবিল ব্যবহারে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯’র ঝুঁকি ও এর বহুমুখী প্রভাব কোনো তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য সমস্যা নয়, বরং এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় এখনই স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাসহ একটি সমন্বিত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন অপরিহার্য বলে মনে করছে টিআইবি। একইসাথে অভূতপূর্ব এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সকল প্রকার আর্থিক লেনদেনসহ প্রতিটি পর্যায়ে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।
জাতির উদ্দেশ্যে ২৫ মার্চ ২০২০ প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্মিলিতভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার যে ডাক দিয়েছেন, তার প্রতি একাত্মতা জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘হোম-কোয়ারেন্টিনে দেশবাসীকে পাঠিয়ে নিতান্তই অপ্রতুল ও বিক্ষিপ্ত কিছু প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে হাতগুটিয়ে বসে থাকার সময় নেই। এখনই সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে একটি সমন্বিত স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা সম্বলিত জাতীয় কৌশল চূড়ান্ত করতে হবে এবং একইসাথে তার বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির অন্তত ১০ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থের যোগানের পাশাপাশি বহুমুখী উদ্যোগ চালিয়ে যেতে হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করা ও চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ও তাদের অমূল্য অবদানের উপযুক্ত সম্মান দিতে হবে।’
রপ্তানি সংশ্লিষ্টখাতের শ্রমিক ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যে উদ্যোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন তাকে সাধুবাদ জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, ‘কীভাবে এর বাস্তবায়ন হবে, বরাদ্দকৃত অর্থ কোন প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের হাতে যাবে এবং এক্ষেত্রে কীভাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে, তার সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এখনই নির্ধারণ করতে হবে। এই সহায়তার আওতা দেশের হতদরিদ্রদের জন্য সমভাবে সম্প্রসারিত করতে হবে। একইভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেমন, স্বল্প বেতনের কর্মজীবী মানুষ, দিনমজুর, শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচালক, গৃহকর্মী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, যাদের অনেকেই ইতোমধ্যে বেকার হয়ে পড়েছেন বা হবেন তাদেরকেও এর আওতায় আনতে হবে।’
নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংকট চলাকালীন সময়ে খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ-লাইন প্রাধান্যের সাথে সচল রাখতে হবে, তা না হলে কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি কোয়ারেন্টিনই মানুষের ক্ষুধা ও মৃত্যুর কারণ হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে নিয়োজিত পুলিশের একাংশের বিভ্রান্ত ও অশোভন বলপ্রয়োগ সংকট ঘনীভূত করছে, যা বন্ধ করতে হবে।
এ ধরনের দুর্যোগে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের পাশাপাশি ক্ষমতা বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ক্ষমতার উৎসও জনগণ। সীমা লঙ্ঘন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা আত্মঘাতী হয়, সরকারকে তা বিবেচনায় রাখতে হবে বলে মনে করে টিআইবি।
নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘নাগরিকের মৌলিক অধিকার, বিশেষ করে জীবন-জীবিকার অধিকারের পাশাপাশি বাক-স্বাধীনতা এবং তথ্য ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘনের সকল সম্ভাবনা প্রতিহত করা সরকারের দায়িত্ব।’ অর্থনীতির চাকা পুনরায় দ্রুত সচল করার জন্য জিডিপির অন্তত ১০ শতাংশ সমপরিমাণের বিশেষ তহবিল গঠন করার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি। প্রয়োজনে মেগা-প্রজেক্টগুলোর অর্থায়ন আনুপাতিক হারে কমিয়ে এনে এই খাতে অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের বরাদ্দের পাশাপাশি দেশের ধনিকশ্রেণিকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। জনগণের করের টাকায় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের একাংশ বিভিন্ন সময়ে বহুমুখী সুবিধা আদায় করে সম্পদের বিকাশ করেছেন। আজ এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা বিশ্বাস করতে চাই তারা জনস্বার্থে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। ‘পাঁচ হাজার কোটি টাকার যে তহবিল প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন তার পুরোটাই যোগানোর দায়িত্ব কী এদেশের মহা-ধনীজন অনায়াসে নিতে পারেন না?’ বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে লিপ্ত বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানি, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতায় আগ্রহী, অংশীদার এবং অনেকে লাভবান, তাদেরকেও নিজেদের স্বার্থে এই বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্রিয়ভাবে অবদান রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।
ড. জামান বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এ বিশাল সংকট মোকাবেলায় সফল হতে হলে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার কোনো বিকল্প নেই। তথ্যের স্বচ্ছ ও অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান সচেষ্ট হবেন বলে আমরা আশা করি। বিশেষ করে কোন খাতে কত বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে, অর্থায়নের উৎস এবং কীভাবে ও কতটা কার্যকরভাবে তা ব্যয় করা হচ্ছে, সে তথ্য নিয়মিত প্রকাশ ও হালনাগাদ করতে হবে। এই সংকটকে পুঁজি করে যেন কোনো ধরনের দুর্নীতি না হয় এবং কেউ যেন অন্যায্য মুনাফা করতে না পারেন, সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে, সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত তথ্যের ব্যাপারে আস্থাহীনতার সুযোগে গুজব ছড়াচ্ছে, যা জনমনে আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংক্রমণ, প্রাণহানি, চিকিৎসা প্রদান ও সুস্থ হওয়ার সংখ্যাসহ প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক সকল কার্যক্রমের তথ্য কোনো প্রকার রাখঢাক না করে প্রকাশ করাটা জরুরি। তাতে জনগণ অধিকতর সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবেন। এতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে।’
সূত্র : সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০

ঢাকায় করোনাক্রান্ত মৃতের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী হৃদয়বিদারক লেখা

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে করোনাক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে একজন ছিলেন রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ এলাকার বাসিন্দা। মৃত্যুর আগে তাকে চিকিৎসা প্রদানকারী এক ডাক্তার বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এ অবস্থায় তিনি একটি হৃদয়বিদারক লেখা প্রকাশ করেছেন।
গত ৯ দিন ধরে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি বুধবার তুলে ধরেন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় মনের অভিব্যক্তি।
তার লেখাটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হল-
হোম কোয়ারেন্টিনে আমি। বুধবার নবম দিন চলছে। রুম বন্ধ। আমি চার দিকে তাকিয়ে নানা কিছু শুধু ভাবি।
খুব সকালে ঘুম ভাঙল। ঘড়িতে দেখি, ভোর পাঁচটা বেজে দশ মিনিট। খুব অস্থির লাগছিল। শান্ত হতে অজু করে ফজরের নামাজ পড়তে দাঁড়ালাম।
গত ১৬ মার্চ আমার প্রাইভেট চেম্বার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক বয়স্ক রোগীকে দেখি এবং আন্দাজ করি এটি কভিড-১৯ জনিত নিউমোনিয়া। এরপর ওষুধপত্র দিয়ে পরামর্শ দেই, দ্রুত আইইডিসিআরে যোগাযোগ করার জন্য।
১৮ মার্চ সকালে গায়ে সামান্য জ্বর অনুভব করি। তড়িঘড়ি করে বাসায় প্রবেশ করি। সহকর্মীরাও বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল।
বাসায় ফিরে স্ত্রীর ছল্ ছল্ চোখ আর উদ্বেগ ভরা প্রশ্নের উত্তরে অভয় দেই, এই আইসোলেশন রোগ নয়, রোগী না হবার জন্য আগাম সতর্কতা।
বইপাগল আমি আজ সময় কাটাচ্ছি বহুদিনের জমে থাকা, না পড়া বইয়ে ডুবে আর নেটে বিভিন্ন দেশের করোনা মহামারীর খবর পড়ে।
১৯ মার্চ জানতে পারি, আমার ওই রোগীটি কভিড-১৯ পজেটিভ এবং তিনি ভেন্টিলেটরে!
আমার সন্দেহপ্রবণ মনটিকে ধন্যবাদ দেই, আগাম সতর্ক করার জন্য। দুঃখজনক সত্য হলো, টোলারবাগের সেই রোগীটি পরবর্তীতে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান বলে জানতে পারি।
মানুষ অসুস্থ হলে চায় প্রিয়জনের স্নেহ, স্পর্শ। আর আজ কি না দূরে যাও তুমি, আরো দূরে; যদি হতে চাও মনের কাছাকাছি…! অদৃশ্য এই শত্রু মানবে না কোনো বাধা বারবার হাত ধোয়া আর আইসোলেশনের শৃঙ্খলা ছাড়া।
হায় পজেটিভ! ভাবছি, সারা জীবন পজেটিভ থিংকিং আর পজেটিভ রাজনীতির কথা বলি আমরা। কিন্তু চিকিৎসা শাস্ত্রে পজেটিভ মানে খারাপ কিছুর অস্তিত্ব প্রকাশ পাওয়া। বাক্য প্রয়োগের ওপর নির্ভর করে একই শব্দের ভিন্নমুখী দ্বোতনা। এ যেন সার্জনের হাতের ছুরি ঘাতকের অস্ত্র হয়ে যাওয়া!
‘হে প্রভু, হে মহান রাব্বুল আলামীন, তুমি রক্ষা করো আমাদের। চোখের পানিতে অন্তরের এ আকুতি শুধু আমার নয়; সারা দেশের সারা পৃথিবীর মানুষের। ইতালিতে সত্তরোর্ধ কভিড-১৯ আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ৩৫ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশ হয়েছে। হায় ইতালি! আধুনিক ইতালির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আমার দেশের কি অবস্থা হবে?
এখন গাইডলাইন মেনে দুই বেলা শরীরের তাপমাত্রা মাপি। স্বেচ্ছা বন্দিত্বের নবম দিনে অপেক্ষা করি আরো পাঁচ দিন পরের স্বাধীনতার জন্য। অপেক্ষা করি স্ত্রী আর একমাত্র সন্তানকে আলিঙ্গনের উষ্ণতার জন্য।
সুস্থ থাকলে হয়তোবা আবারও হব কর্মচঞ্চল। কিন্তু আমাদের অপ্রতুল স্বাস্থ্য ক্ষমতা কতটুকু রক্ষা হবে করোনা মহামারী প্রতিরোধের জন্য?
হে প্রভু, হে মহান প্রভু, রক্ষা করো এই দেশ। রক্ষা করো সোনার বাংলাকে।
collected : Ehteshamul Hoq Jihad

তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে!

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মৃুসাদ্দাদ (র.) . . . আব্দুল্লাহ (ইবনে ওমর রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। যেমন - জনগণের শাসক তাদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিসয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। একজন পুুরুস তার পরিবারের পরিজনের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী স্বামীর ঘরের এবং তার সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। আর গোলাম আপন মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কাজেই সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। শোন! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে।

কিছু আন্দোলন ঘরে বসেই করতে হয়: ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে আগামী ঈদুল ফিতর পর্যন্ত করার কথা ভাবছে সরকার।
একই সঙ্গে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও ঈদের পরে নেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের (শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়) সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

জানা যায়, সোমবার আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এ ছুটি আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে রমজান শুরু হবে। রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকতে পারে এমন শঙ্কায় বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করার পদ্ধতি খোঁজা শুরু করেছে শিক্ষার সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। বন্ধের এ সময়কালের সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন ছুটি সমন্বয় করা হবে।

আমার ফ্যামিলি যেন থাকে দুধেভাতে বাকিরা মরিয়া যাক করোনার ঘাতে!

"আমার ফ্যামিলি যেন থাকে দুধেভাতে
বাকিরা মরিয়া যাক করোনার ঘাতে"*
দুই দিনে কিনিয়াছি চারমণ চাল
আশি কেজি আটা আর কুড়ি কেজি ডাল!
আরও কিছু ডাল কিনে করিব মজুদ
ষাট কেজি কিনিয়াছি প্যাকেটের দুধ!
তেল এত কিনিয়াছি – সব ঢালি যদি
নিমেষেই হয়ে যাবে কুশিয়ারা নদী।

লবণের বস্তাটা সস্তাই ছিল
ভাবা যায় পেয়ে গেছি ত্রিশ টাকা কিলো?
কিনিয়াছি চা-র পাতা, ঘৃত আর চিনি
মসলার গুঁড়াগুলি ঘুরে ঘুরে কিনি।
পেঁয়াজ-রসুন-আদা বস্তা ভরিয়া
কিনিয়াছি, দুর্দিন স্মরণ করিয়া।
বিস্কুট-চানাচুর-সেমাই আর ম্যাগি
কিনে কিনে ভরিয়াছি চিন-চার ব্যাগই!
আপাতত কিনিয়াছি চারশত ডিম
সামনের দিনে যদি খাই হিমশিম!

মাছ কিনে রাখিয়াছি ডিপ ফ্রিজে ভরে
খাওয়া যাবে দশজনে ছয়মাস ধরে।
সাধ ছিল পুরা গরু কিনে রাখি ফ্রিজে
পারি নাই সেটা ভেবে দুঃখিত নিজে!
মুদি শেষ এরপর ফার্মেসি যাব
সিভিট কিনব আমি যতগুলো পাব।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার একশোটা আমি
অর্ডার দিয়া দিছি হোক যত দামি।

গ্যাসের ওষুধ আর অ্যামোডিস, নাপা
দশ বক্স কিনে নেব – এটা নয় চাপা!
কন্ডোম? হিসাবটা মিলাইয়া নিন
ছয়মাসে বাদ যাবে চব্বিশ দিন!
করোনায় মরি আর যাহাতেই মরি
ভাতের অভাবে আমি মরিব না, স্যরি!
আমার ফ্যামিলি যেন থাকে দুধেভাতে
বাকিরা মরিয়া যাক করোনার ঘাতে!

উৎসর্গঃ সকল মজুদমারানিকে।
___ব্রত রায়ের লেখা!

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০২০

করোনায় করুণা! - ড. ফরিদ এ সোবহানী

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মিশরের এক সাবেক সাংসদ করোনাকে ঘৃণা না করতে বলেছেন! তার দৃষ্টিতে করোনা মানবজাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বিষয়টি চিন্তার জগতে নাড়া দেয়ার মত। আমার ভাবনাগুলো ছন্দে ছন্দে প্রকাশের চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস এ কবিতাটিতে চিন্তার খোরাক রয়েছে। মহান রব আমাদের সকল ভালো প্রচেষ্টাকে কবুল করুন। আমীন।
করোনায় করুণা!
- ড. ফরিদ এ সোবহানী
করোনা তোমায় করুণা রয়েছে
অদৃশ্য শক্তির মত
তোমার আগমন হুশ ফিরিয়েছে
চিন্তাশীলদের যত।
শয়তানের খপ্পরে পড়ে মোরা
গড়েছি পাপের পাহাড়
তোমার আগমনে ভীত সন্ত্রস্ত তাই
প্রভু যেন কাহ্হার!
কাবা বন্ধ মসজিদ বন্ধ
বন্ধ কী দরজা তওবার!
তোমার আগমন শেখাবে নিশ্চয়ই
ক্ষমা মাগিবার।
জাহান্নামের কিনারায় বসে
চলছে জুলুম পাপাচার
আঘাত হানো আশীর্বাদে
সত্যকে চিনবার।
বিজ্ঞানের অসহায়ত্ব দেখেছি
জেনেছি কোয়ারেন্টিন
তোমার আগমনে নিরুপায় সবাই
আমেরিকা ইতালি চীন।
ক্ষমতা দেখেছি দাপট দেখেছি
সারা বিশ্ব জুড়ে
তোমার আতঙ্কে সবাই এখন
'ইয়া-নাফসি ইয়া-নাফসি' করে।
তুমি দেখিয়েছো শৃঙ্খলা
শিখিয়েছো শিষ্ঠাচার
হাঁচি কাশি নয় শুধু
সংশোধিতে মানবতা অনাচার।
কোরআন শরিফ সেরা গ্রন্থ
পড়িনি নিয়মিত
তোমার আগমনে বিশ্ব মুসলিম
কাঁদছে অবিরত।
গভীর রজনীতে খুঁজে ফিরি এখন
সারা জাহানের প্রভু
চোখে আঙুল দিয়ে প্রভুত্ব দেখিয়েছো
চিন্তা করিনি কভু। ‌
তোমার আগমন ভাবিয়ে তুলেছে
কিসের বাড়ি গাড়ি
নারী পুরুষের কোথায় আকর্ষণ
লাশ যে সারি সারি!
অন্যায় অবিচার চলছে সদা
কে করে তা বর্জন!
অশ্লীলতার চরমে মোরা
তাইতো গজবী গর্জন।
জানিনা কত ভালো মানুষ
শিকার করোনায়
ক্ষমা করো তাদের করোনার স্রষ্টা
তোমার করুণায়।
জানি তুমি কার ইশারায়
নিচ্ছো তাজা প্রাণ
অচিরেই তোমার বিদায় হবে করোনা
আল্লাহ মেহেরবান।।

কিভাবে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসচেতন করতে পারি? সাধারণ চিকিৎসা কি?



১। ইমার্জেন্সি /জরুরি অসুস্থতা ব্যতীত হাসপাতাল বা ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়া বন্ধ করুন। প্রয়োজনে আপনার পরিচিত ডাক্তারের সাথে ফোনে, মেসেজে যোগাযোগ করুন। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ফ্লু এর জন্য জ্বর, সর্দি ও কাশি হলে বাড়িতে অবস্থান করুন।
সাধারণ সর্দি ,কাশি ,জ্বর,গলা ব্যথা হলে নীচে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে (যা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির জন্যও চিকিৎসা)।
২। হ্যান্ডশেক ও কোলাকুলি করবেন না। কারো সাথে কথা বলতে হলে ৩-৪ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে কথা শেষ করুন।
৩। সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে মুখ, চোখ ও নাক স্পর্শ করবেন না। সাবান ও পানি কাছাকাছি না থাকলে ৭০% এলকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৪। হাঁচি, কাশিতে টিস্যু বা রুমাল ইউজ করুন। তারপর টিস্যুটি ঢাকনা যুক্ত ডাস্টবিনে ফেলুন। রুমাল হলে ব্যবহার এর পর ধুয়ে ফেলুন।
৫। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। পরিবারের যিনি কাজে বের হবেন তিনি ঘরের কেনাকাটা ও প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেবেন। আমাদের গ্রামের মানুষ সচেতন হয়ে
যদি নির্দিষ্ট দূরত্ব ৩-৪ ফুট বজায় রেখে চলাচল করতে পারেন সেক্ষেত্রে হাঁটাচলায় নিষেধের প্রয়োজনীয়তা কম (তবে যাদের জ্বর কাশি সর্দি গলা ব্যথা আছে তারা ঘর থেকে বের হবেন না)।

৬। সরকার স্কুল,কলেজ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের নির্দেশনা দিয়েছেন ছেলেমেয়েদের ঘরের ভিতর রাখতে, বাইরে একসাথে মেলামেশা,একসাথে খেলাধুলা নিয়ন্ত্রণ করা এবং কোচিং সেন্টারে না পাঠানো।নইলে স্কুল বন্ধ হলেও কোন লাভ হবে না।
৭। ওয়াজ মাহফিল, কীর্তন,তীর্থযাত্রাসহ সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যেহেতু সরকার কর্তৃক মসজিদে নামাজ আদায় এখনও বন্ধ করা হয়নি,যারা মসজিদে নামাজ আদায় করতে চান তাদের জন্য বলছি- অসুস্থ বা যাদের জ্বর,কাশি,সর্দি ও গলাব্যথা আছে,যারা পূর্ব থেকে ডায়াবেটিস,
হার্ট,কিডনি লিভারের রোগে ভুগছেন, বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ না করার অনুরোধ করছি। অংশগ্রহণ আপনার ও আপনার পরিবারের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
৮। যারা বড় শহর ও মফস্বল শহরে অবস্থান করছেন, অফিসে যেতে হচ্ছে তারা সিঁড়ি,লিফট, দেয়াল স্পর্শ করার পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। কলিগদেরকে স্বাস্থ্য সচেতনতা হতে উৎসাহিত করুন আপনার ও তার নিরাপত্তার জন্য। দাপ্তরিক কাজে আপনার কলম আলাদা রাখুন। ফাইল পত্র স্শর্শ করে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।আপনার মোবাইল, ল্যাপটপ, অফিস ডেস্ক পরিস্কার রাখুন।
৯। গ্রামের বাজার বা শহরের বাজার যেখানেই যান ৩-৪ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। সচেতন করতে পারলে এইটা গ্রামে সম্ভব।
১০। টাকা লেনদেন এর ক্ষেত্রেও বলবো,স্পর্শ করে সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে মুখে বা শরীরের হাত দিবেন না। ব্যাংকে গেলে নিজের কলম ব্যবহার করুন।এইখানেও দূরত্ব বজায় রাখুন।এই বিষয়ে অন্যকেও উৎসাহিত করুন।
১১। বাইরের কোন পার্সেল আসলে তা রিসিভ করে ৩ দিন উষ্ণ স্থানে রেখে দিন।হকারকে আপাতত পত্রিকা দিতে নিষেধ করুন।
১২। মাস্ক নিয়ে মাতামাতির কিছু নাই। সাধারণ মাস্ক এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম নয়। যিনি অসুস্থ এবং যারা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সেবা দিবেন,তারাই মাস্ক ব্যবহার করুন।
১৩। সাধারণ করোনা ভাইরাস তাপ সংবেদনশীল। কিন্তু SARS CoV-2 এর বিষয়ে কোন ধরনের তথ্য নাই যদিও চীনে এই ভাইরাস ঠান্ডার চেয়ে গরমে কম সংক্রমণ ঘটেছে।তাই বলে গরমে এই ভাইরাস কাবু হবে এমন ভাবার কারণ নাই।
১৪। বর্তমানে COVID-19 চিকিৎসায় বিভিন্ন দেশের প্রটোকলে Remdesivir,Ritonavir,Lopinavir,  Osaltimavir, Cloroquine, Hydroxycloroquine ইত্যাদি এন্টি ভাইরাল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তবে কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেন্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের Genome পরিবর্তন এর মাধ্যমে।আর এইসব ঔষধ বাসায় দেয়ার সুযোগ নাই। খুব খারাপ রোগী যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদেরকে দেয়া হয়। কোভিড-১৯ এর প্রিভেন্টিভ কোন ঔষধ/ভ্যাক্সিন নাই। এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ঔষধ নিয়ে অনেক কিছু সেয়ার করা হয় যে ঔষধগুলোর কোন ভিত্তি নাই। সেগুলো এড়িয়ে চলুন।

১৫। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর প্রিয় কিছু খাবার যেমন বার্লি, খেজুর,ডুমুর,আঙ্গুর,মধু, তরমুজ,দুধ, মাশরুম,অলিভ অয়েল,ডালিম-বেদানা, ভিনেগার, জমজমের পানি এবং এই ধরনের যে সমস্ত খাবার স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় তা খেতে পারেন। লেবু,টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। উপরোক্ত খাবারগুলো শরীরের ইমিউনিটি বুস্ট করে। বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধ, লতাপাতার কথা বলা হয় যার কোন ভিত্তি নাই। এইগুলো এড়িয়ে চলুন।
১৬। SARS CoV-2 ভাইরাসজনিত জ্বর, কাশি, সর্দি, গলা ব্যথা হলে বিশেষ কোন ঔষধ নেই। সাধারণ ফ্লু এর জন্য যে ঔষধ আমরা ব্যবহার করি তাই যথেষ্ট।
নীচের ঔষধ ৭ দিন পর্যন্ত খাবেন।
1. Tab Nap Extend/Ace XR(Paracetamol 665mg).....4-7 days
1+1+1....৩-৪ দিন অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী
Age>12 Years
500 mg,8 hourly, Age 6-12 Years
125-250 mg,8 hourly ,Age 2-6 Years
2. Tab Fexo 180 mg(Fexofenadin)
0+0+1......7 days
>12 Years,hourly
60 mg ,12 hourly,Age 6-12 Years
30mg,12 hourly,Age 2-6 Years
3. ORS N 1 packet+500ml পানি দিনে ২-৩ বার নাক যদি বন্ধ থাকে Antazol Drop Packet এ নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন।
4. স্বাভাবিক খাবার খাবেন। ORS সহ মোট ২.৫-৩.০ লিটার তরল খাবেন। কুসুম গরম পানি খাবেন ও কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন। বিশ্রামে থাকবেন। ঘরে অবস্থান করবেন যা হোম কোয়ারান্টাইন বলে পরিচিতি।যদি জ্বর, কাশি ,সর্দি, গলা ব্যথা ৭ দিনের বেশি হলে অথবা বুকে চাপ লাগলে, শ্বাসকষ্ট হলে, তবে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,সিভিল সার্জনের হট লাইনে যোগাযোগ করবেন।
মনে রাখবেন সাধারণ চিকিৎসায় ৮০-৮৫ ভাগ কোভিড-১৯ রুগী ভাল হয়ে যায়। অতএব করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হলেও আতংকিত হবেন না।১৫-২০ রোগীর ভাগ হাসপাতালের সাপোর্ট লাগে যা আমাদের দেশে অপ্রতুল।
Dr Abdus Salam Osmani (Abu)
www.chunati.com

সম‌য়ের দাবী: আব্দুল হান্নান চ‌ৌধুরী

স্বাধীনতার কথা ভে‌বে ভে‌বে আজ
ম‌নে লা‌গে বড় ব্যাথা,
স্বাধীনতা আ‌জি খাঁচায় বন্দী
চা‌রি‌দি‌কে শুধু পরাধীনতা।
ভিন দে‌শি‌দের তা‌ড়ি‌য়ে মোরা
‌ক‌রে‌ছ‌িলাম দেশটাক‌ে স্বাধীন,
‌ভিন দে‌শেরই ফা‌ঁদে প‌ড়ে আবার
‌নি‌জেরাই কর‌ে‌ছি ‌নি‌জে‌দের অধীন।
ঘুষ ছাড়া হয়না কো‌নো কাজ আর
অ‌ফিস কিংবা আদাল‌তে,
এই য‌দি হয় দে‌শের হালত
আছ‌ি মোরা ত‌বে কোন প‌থে।
ন্যা‌য়ের শাসন কোথাও নেই আজ
অন্যায় প্র‌তি পদ‌ে পদ‌ে,
স্বাধীনতা সে‌তো চূড়ায় উ‌ঠে‌ছে
নামাই তা‌কে কোন প‌থে।
দুর্নী‌ত‌ি‌তে সয়লাব গোটা দেশ
‌নেই আর কোথাও বাকি,
এই য‌দি হয় মো‌দের স্বাধীনতা
ধ্বং‌সের আর আ‌ছে কি বা‌কি।
হত্যা খু‌নের মহ‌োৎসব চ‌লে
বলব‌ো কি আর তার কথা,
‌নি‌রব‌ে নিভৃ‌তে চোখ বু‌ঁজে শুধু
কা‌ঁদছে আজ মানবতা।
গণতন্ত্র সে‌তো সোনার হর‌িণ
তা‌কে ধরা বড় দায়,
হ‌রিলুট চল‌ছে‌ সর্বত্র
না জা‌নি প‌ড়ে কার কা‌ঁধে কার দায়।
বছ‌রে এক‌দিন দিবস পালন
এরই নাম নয় স্বাধীনতা,
স্বাধীনতা সে‌তো সততার সা‌থে
দে‌শের কা‌জে লে‌গে থাকা।
কথায় কথায় মু‌খের বু‌লি‌তে
দেশ েপ্র‌ম সে‌তো নয় খা‌ঁটি,
দে‌শের ত‌রে কাজ কর‌তে হ‌বে
‌রে‌খে জীবনটা‌কে বা‌জি।
‌দেশ েপ্রম‌কে জা‌গি‌য়ে তু‌লে
মি‌লে ম‌ি‌শে কর‌ো তবে কাজ,
‌হ‌িংসা বিদ্ধ‌ে‌ষ ভুল‌তে হ‌বে স‌বে
সম‌য়ের দাবী সে‌তো আজ।

চট্টগ্রামের বিশেষ কিছু এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য বিতরণ

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিভাগের ১৩ তম ব্যাচ, অজেয়'১৩ বা Invincible '13 এর সকল সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ও সহযোগিতায় চট্টগ্রামের বিশেষ কিছু এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য যেমনঃ চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, লবন, নুডলস ও সাবান বিতরণ করা হয়েছে। এই সংকটাপন্ন সময়ে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে সমাজের স্বল্প আয়ের মানুষ যেমনঃ সাধারণ শ্রমিক, দিনমজুর ও অন্যান্য নিম্ন আয়ের মানুষ চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই তাদের মুখে অন্ততঃ দু'বেলা আহার যোগাতে তাঁদের এই মহান প্রচেষ্টা।
অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁদেরকে ধন্যবাদ, তাঁদের জন্য অনেক অনেক দুয়া আর শুভকামনা। আল্লাহ তাঁদের এই কাজকে কবুল করুন, তাঁদের সামর্থ বাড়িয়ে দিন আর এ কাজ যেন অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার হয়।

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ দেশ পূর্ণ হলো

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২৭ মার্চ ২০২০ করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো পৃথিবী। এর মধ্যে ভাইরাসটি ২০০ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও)।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে কভিড-১৯। এর মধ্যে বিশ্ব জুড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৫লাখ ৩১ হাজার মানুষ। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২হাজারেরও বেশি। 

সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে েইতালিতে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ২১১। এরপর স্পেনে মারা গেছে ৪ হাজার ৩৬৫ জন। চীনে মারা গেছে ৩ হাজার ২৯১ জন। 

গত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যায় এগিয়ে ছিল চীন। দেশটিতে সংক্রমন থেমে যাওয়ায় ভাইরাসটির নতুন কেন্দ্র হয়ে দাড়ায় ইউরোপ। ফলে গত কয়েক দিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি ও স্পেন। 

এদিকে আক্রান্তের সংক্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ৮৫ হাজার ৬৫৩ জন মানুষের দেহে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এরপর ইতালিতে ৮১ হাজার ৭৮২ জন। স্পেনে ৫৭ হাজার ৭৮৬ জন মানুষকে আক্রান্ত করেছে কভিড-১৯। 
.
এছাড়া ইরানে মারা গেছে ২ হাজর  ২৩৪ জন। ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৬৯৮। যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ১ হাজার ২৯৬ জন মানুষ।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন হয়ে গেছে অনেক দেশ। স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বের অথ্যনীতি-ব্যবসা-বাণিজ্য। শতাধিক দেশে বন্ধ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ধর্মীয় প্রার্থনাস্থলগুলোও বন্ধ কওরে দেয়া হয়েছে জনসমাগম রোধে। অধিকাংশ দেশ বাতিল করে দিয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ। 

সূত্রঃ আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

তাওবাহ কেন এবং কিভাবে


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ মৃত্যু, জীবনের সবচেয়ে কঠিন এক বাস্তবতা। মৃত্যুর কোনো সময় নেই। মৃত্যুর কোনো দয়া-মায়া নেই। সে চিনে না ছেলে বুড়ো, ধনী গরীব। সে মানে না অনুনয় অনুরোধ। এমন কোনো অস্ত্র নেই তাকে প্রতিহত করতে পারে। এমন কোনো দুর্গ নেই যেখানে তার থেকে মানুষ আশ্রয় পেতে পারে।
.
এক করোনা ভাইরাস গড়ে শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু আজ যদি করোনা মহামারী আকার ধারণ নাও করত, মৃত্যু থেকে আমরা পালাতে পারতাম না। মৃত্যু একদিন আসতই। তবে করোনা আর মৃত্যুর মাঝে একটি গভীর মিল আছে। মৃত্যুর যেমন কোনো দিন তারিখ নেই, আমরা জানি না কে আগে মরবে, তদ্রূপ করোনার কোনো দিন তারিখ নেই, জানি না কাকে আগে আক্রমণ করবে। হয়ত যিনি এই পোস্টটি লিখছেন, তিনিই তালিকার ওপরে আছেন। আল্লাহ রক্ষা করুক।
.
তাই সময় থাকতে আমাদের তাওবাহ করা উচিত। মৃত্যু পূর্বেই নিজেদের শুধরে নেয়া উচিত। লুকমান (আ.) তাঁর ছেলেকে বলেছিলেন,
يا بني ، لا تؤخر التوبة فإن الموت يأتي بغتة
'প্রিয় সন্তান, তাওবাহ করতে দেরি করো না। কারণ, মৃত্যু যে কোনো মুহূর্তেই চলে আসতে পারে।'
.
অধিকন্তু আমাদের পূর্বসূরিগণ সকাল সন্ধ্যা তাওবাহ না করাকে যুলুম গণ্য করতেন। তাবিঈ মুজাহিদ (রহ.) বলেন,
من لم يتب إذا أمسى وإذا أصبح ، فهو من الظالمين
'যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা তাওবাহ করে না, সে যালেমদের অন্তর্ভুক্ত।'
.
প্রশ্ন (১) তাওবাহ কীভাবে করতে হয়?

সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযি.) বলেন,
التوبة النصوح : الندم بالقلب ، والاستغفار باللسان ، والإضمار أن لا يعود إليه أبداً.
'তাওবাতুন নাসুহা, অর্থাৎ খাঁটি তাওবার তিনটি শর্ত:
(১) অন্তর দিয়ে অনুশোচনা করা
(২) জিহ্বা দিয়ে মাফ চাওয়া
(৩) এবং পাপ পুনরাবৃত্তি না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা
.
প্রশ্ন (২) কোন কোন পাপ থেকে তাওবাহ করবেন?

ইমাম নববী (রহ.) বলেন,
'আলিমগণ এই ব্যাপারে একমত, প্রত্যেক পাপ থেকে তাওবাহ করা ওয়াজিব। যদি গুনাহের সম্পর্কে আল্লাহর সঙ্গে থাকে এবং কোনো মানুষের অধিকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকে, তাহলে এ ধরণের তাওবাহ কবুল হওয়ার শর্ত হচ্ছে তিনটি: ১। পাপ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা, ২। পাপে লিপ্ত হওয়ার জন্য অনুতপ্ত হওয়া, ৩। আগামীতে ঐ পাপ না করার দৃঢ় সংকল্প করা। আর গুনাহের সম্পর্ক যদি অন্যের হক নষ্ট করার সাথে থাকে, তাহলে তাওবার প্রথম শর্ত হচ্ছে ব্যক্তির হক ফিরিয়ে দেয়া।' [রিয়াদুস সালেহীন, ২য় পরিচ্ছেদ]
.
প্রশ্ন (৩) তাওবাহ কখন করবেন?

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন,
তাওবাহ করতে গড়িমসি না করা। গুনাহ করার সাথে সাথে তাওবাহ করা ফরজ। যদি কেউ তাওবাহ করতে দেরি করে তবে সে তার জন্য দায়ী হবে। যদি সে পরে তাওবা করে, তবে তাওবাহ করতে দেরি করার জন্য আলাদা করে তাওবাহ করতে হবে।
.
এ জন্য ইয়াহইয়া ইবনু মুয়ায (রহ.) বলেন,
الذي حجب الناس من التوبة: طول الأمل وعلامة التائب إسبال الدمعة وحب الخلوة والمحاسبة للنفس عند كل همة
'মানুষদের তাওবার পথে প্রধান অন্তরায় হলো দীর্ঘ আশা। আর প্রকৃত তাওবাকারীর লক্ষণ হলো: অশ্রু ঝরে পড়া, (পাপের আড্ডাখানার বদলে) নির্জনতা পছন্দ করা, এবং নিজের প্রত্যেক ইচ্ছার বিপরীতে আত্ম-জিজ্ঞাসা করা।'
উদাহরণস্বরূপ: এটি করা হারাম না হালাল? এর দ্বারা আমার আখিরাত বরবাদ হবে না তো?
.
প্রশ্ন (৪) তাওবার পর যদি আবার পাপে জড়িয়ে যান?

শায়খ রুস্তাকি (রহ.) বলেন, 'অনেকে বলে, "আমি তাওবা করি না কারণ, আমি জানি, আমি আবার গুনাহের দিকে ফিরে যাব"। বস্তুত এমন ধারণা রাখাই শয়তানের প্ররোচনা। কেউ জানে না তার মৃত্যু কখন হবে। কাজেই বান্দার কাজ হলো তাওবাহ করা। আল্লাহ তাঁর অসীম রহমতে হয়ত গুনাহ ত্যাগ করার দৃঢ়তা দান করবেন। যদি কেউ আবার গুনাহ করেও বসে, তবুও অন্তত সে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল এবং তাওবার মাধ্যমে পূর্বের গুনাহ থেকে নিজেকে পবিত্র করে নিয়েছিল।'
.
মোট কথা, তাওবাহ করার পর পুনরায় ভুল হয়ে গেলে পূর্বের তাওবাহ বাতিল হয়ে যায় না। অধিকন্তু আমাদের কাজ হবে, গুনাহ হয়ে গেলেই তাওবাহ করা। বার বার করা। আল্লাহ যদি আমাদের মাঝে এই আন্তরিকতা দেখেন, আশা করা যায় তিনি দয়াবশত একদিন না একদিন পাপ থেকে চিরতের জন্য বেঁচে থাকার তাওফীক দেবেন।
.
প্রশ্ন (৫) তাওবার ওপর অটল থাকার উপায়গুলো কী?

এক. খারাপ সঙ্গ পরিত্যাগ করা। প্রয়োজনে একা থাকা, তবুও তাদের সাথে না বসা।
- অন্তর শক্ত যাদের, তাদের সাথে বসলে আপনার অন্তর শক্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য উমার (রাযি.) বলেন,
اجلسوا إلى التوابين فإنهم أرق أفئدة
'তাওবাকারীদের সাথে বসো। কারণ, তারা সবচেয়ে নরম মনের অধিকারী।'
.
দুই. ইস্তিগফার ছেড়ে না দেয়া। প্রতিদিন আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া।
- নবীজি এর পূর্বের এবং পরের সকল ভুল ত্রুটি আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। তথাপি তিনি দৈনিক ৯৯ বার (অপর এক হাদীস অনুযায়ী ১০০ বার) তাওবাহ করতেন। [বুখারী, মুসলিম] তাহলে আমাদের কতবার করা উচিত? অথচ আমরা জানি না আমাদের কোন পাপ আল্লাহ মাফ করছেন, কোনটা করছেন না!
.
আলী (রাযি.) বলেন,
العجب ممن يهلك ومعه النجاة ، قيل : وما هي ؟ قال: الاستغفار
'আযাব ব্যক্তিকে ধ্বংস করে দেয়। তবে এ থেকে পরিত্রাণের উপায় আছে।' তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, 'সেটা কী?', তিনি বলেন, 'ইস্তিগফার।'
.
তিন. নেক আমল জারি রাখা, পাপের কারণে আমল না ছাড়া।
- আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ
'নিশ্চয়ই নেক কর্ম পাপরাশি মিটিয়ে দেয়।' [সূরা হূদ, ১১: ১১৪]
.
আল্লাহ আরও বলেন,
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّـهِ إِنَّ اللَّـهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
'বলো, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি অতি ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।' [সূরা যুমার, ৩৯: ৫৩]
--------
পাশাপাশি নিজেকে সবসময় নেক আমলে উদ্বুদ্ধ করতে এবং পাপ থেকে দূরে থাকতে যে বইগুলো প্রাত্যহিক রুটিনে রাখতে পারেনhttps://bit.ly/33SGD2r

বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০২০

আজ ২৫ শে মার্চ : আধ্যাত্মিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, শাহ্ সূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার সাহেব (রাহ.) এর ২২ তম ওফাত বার্ষিকী।

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ২৫ মার্চ, বৃহস্পতিবার, ২০২০
★ জন্ম :- এ মহান সূফী সাধক ও সমাজ সেবক ১৯৩৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী আপার বার্মার থাংগু জেলার পিনজুলুক রেল স্টেশনের ৩ মাইল পূর্বদিকে কালা বস্তি বাঙ্গালি কলোনিতে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় তার বাবা ব্যবসায় উপলক্ষে সেখানে সপরিবারে অবস্থান করতেন। কথিত আছে যে, পীর সাহেবের পূর্বপুরুষগণ আরব দেশ থেকে প্রথমে বার্মা এবং পরে এদেশে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আগমন করেন। সেখানে যারা ধর্ম কর্ম প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করতেন তাদেরকে "মিয়াজী" বলা হত। এই মিয়াজি পরিবার লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়া স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তুললে সেখানে মিয়াজী পাড়ার গোড়াপত্তন ঘটে। পীর সাহেবের বাবা মাওলানা মোহাম্মদ ওয়াসি উদ্দিন মিয়াজী ছিলেন উদার ও পরহেজগার ব্যক্তিত্ব। তার দাদা ও পরদাদাও সুফী সাধক বড় আলিম ও শরীয়তের পাবন্দ ছিলেন। তারা হলেন যথাক্রমে মাওলানা মুহাম্মদ আলিম উদ্দিন মিয়াজী ও মাওলানা মোহাম্মদ আছহাব উদ্দিন মিয়াজী রাহ.। হুজুরের মহীয়সী মাতা ছিলেন ফিরোজা খাতুন। তিনি অত্যন্ত ধর্মপরায়ণা, দানশীলা ও পর্দানশীন মহিলা ছিলেন। তিনি কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন যাপন করতেন এবং গারাংগিয়া দরবার শরীফের হযরত বড় হুজুর কেবলা শাহ সুফি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল মজিদ রাহ. এর মুরিদ ছিলেন।
★ পড়াশোনা :- আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার ছাহেব কেবলা রাহ. ১৯৪৭ সালে (পাঞ্জুম তথা দাখিল) ১৯৪৯ সালে (ছিয়ম তথা আলিম) ১৯৫১ সালে কৃতিত্বের সাথে (উলা তথা ফাজিল) পাস করেন এবং ফাজিলে রেকর্ডসংখ্যক নাম্বার পাওয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ হুজুরকে রৌপ্য পদকে ভূষিত করেন। অতঃপর বায়তুশ শরফ দরবারের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবে আলম হযরত শাহ্ সূফী মীর মোহাম্মদ আখতর ছাহেব রাহ. এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে একই বছর তিনি উম্মুল মাদারিস খ্যাত ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসায় কামিল জামাতে ভর্তি হন এবং ১৯৫৩ সালে তিনি এখান থেকেই মমতাজুল মুহাদ্দিসীন (এম.এ) সনদ লাভ করেন।
★ শিক্ষকতা:- আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার ছাহেব রাহ. ১৯৫৩ সালে উনার পীর মুর্শিদ কুতুবুল আলম হযরত শাহ্ সুফি মীর মোহাম্মদ আখতর ছাহেব রাহ. পবিত্র বাগদাদ শরীফ গমন করলে এবং তার সাথে সফরসঙ্গী হিসেবে চট্টগ্রামের মনসুরাবাদস্থ হাজী মসজিদের ইমাম ভ্রমণ করলে, আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার সাহেব রাহ. তার স্থলে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন আরে সময় জনৈক আরেকজন ইমাম এর মারফত জানতে পারেন যে, পাঁচলাইশস্থ ওয়াজেদিয়া আলিয়া মাদরাসায় একজন শিক্ষকের পদ খালি আছে। অতঃপর তিনি সেখানে গিয়ে অধ্যক্ষ মাওলানা আতিকুল্লাহ খান সাহেবের কাছে সাক্ষাৎকার দেন। আর তিনি এতে সন্তুষ্ট হলে ১৯৫৪ সালে ওয়াজেদিয়া আলিয়া মাদরাসাতে ইলমুল হাদিসের শিক্ষক হিসেবে আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার সাহেব রাহ. কে নিয়োগ প্রদান করেন। আর এই মাদরাসাতেই হুজুর ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত একাধারে ১৪ বছর ইলাম ও আমলের আলোয় আলোকিত হয়ে সোনার মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
★ বাইয়াত গ্রহণ ও খেলাফত :- ১৯৪৮ সালে আলিম শ্রেণীতে (১ম বর্ষে) অধ্যয়নকালে পবিত্র শবে বরাতের রাতে দোয়ার জন্য স্টেশন রোড মসজিদে আসলে, কুতুবুল আলম শাহ সূফী মীর মোহাম্মদ আখতর ছাহেব রাহ. হুজুরকে খাস কামরায় ডেকে নিয়ে বাইয়াত করান। অতঃপর তিনি তার পীর-মুর্শিদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন সফরসঙ্গী হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। কখনো কখনো মুর্শিদ কেবলা (কুতুবুল আলম শাহ সূফী মীর মোহাম্মদ আখতর ছাহেব রাহ.) এর নির্দেশে উনার পক্ষ হতে দূর-দূরান্তে জিকির ও তরিকতের প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি হিসেবে গমন করতেন। তার মুর্শিদ প্রায় দু'বছর অসুস্থ থাকাকালীন সময়ে মাওলানাকে সার্বক্ষণিক সোহবতে রেখে তালিম দিতেন। এবং খেলাফতের গুরু দায়িত্ব অর্পণের জন্য মাওলানাকে রুহানী ফয়েজ ধারা গড়ে তুলে ক্রমান্বয়ে সম্মুখপানে এগিয়ে নিয়ে চললেন। অবশেষে ১৯৩১ সালে হজের সময় পুণ্যভূমি মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফ যাওয়ার পথে একটি ছোট দু তলা ঘরের নিচে তার পীর মুর্শিদ মাওলানা কে ডেকে আনলেন এবং তরিকতের ভাইদের উপস্থিতিতে বললেন।
"আমি এতদিন মাওলানার (শাহ আবদুল জব্বার ছাহেব) এর পরিচয় মানুষের নিকট প্রকাশ করিনি। কারণ সময় হয়নি। লোকজন তার আসল পরিচয় পেলে সময়ে-অসময়ে বিরক্ত করা শুরু করতো, তাতে আধ্যাত্মিক উন্নতি ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাআলা সময় মত থাকে মানুষের নিকট পরিচয় করিয়ে দেবেন। তখন এমন ভাবে মানুষ তার দিকে ঝুঁকে পড়বে যে, তার আহার নিদ্রার ব্যাঘাত ঘটবে। মরনের বিশ্বাস তার মুর্শিদ থাকে পূণ্যভূমি মক্কার কাবা শরীফ ও মদীনার রওজা শরীফের মাঝখানে খেলাফতের কঠিন দায়িত্ব অর্পণের অর্থ আমানতদারী, সততা, প্রভৃতি মানবিক গুণে গুণান্বিত হয়ে সৃষ্টির সেবা তথা ইসলামের মূলনীতি বুলন্দ করা।
★ প্রতিষ্ঠানসমূহ :-
এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার ছাহেব রাহ. প্রতিষ্ঠা করেছেন ৬০ টি মসজিদ, ১৮৮ টি দ্বীনি তালিম কেন্দ্র, ১০ টি মাদ্রাসা, ১০ টি হেফজখানা, ১৫ টি এতিমখানা, ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ টি একাডেমি, ১৯৯২ সালে ডিসেম্বর মাসে কক্সবাজার শিশু হাসপাতাল (যা পর্যায়ক্রমে পরে ফ্যাকো সার্জারি সম্মানিত অত্যাধুনিক চক্ষু হাসপাতালে উন্নীত হয়,) ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সে বায়তুশ সরফ দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র চালু, ১৯৯০ সালে রাজধানীর ফার্মগেটে বায়তুশ শরফ দারুশ শেফা ক্লিনিক নামে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, সহ দেশব্যাপী বহু সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান করে গেছেন। শুধু তাই নয় মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আর্থিক ও মানবিক সাহায্য প্রদান করেন ১৯৭৮,১৯৮৮,১৯৮৯, সালে এবং বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন ১৯৮৭,১৯৯১,১৯৯৪ সালে।
★ ভয়েস অব আমেরিকা :- ৮ ই জানুয়ারি ১৯৯২ সালে তার কর্মময় জীবন নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগে (VQA) এক সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে হতে তার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে মিনি গভমেন্ট আখ্যায়িত করা হয়।
★ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বকোষে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমেরিকা বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত ইন্টার্নেশনাল ডাইরেক্টরি লিডারশিপ গ্রন্থে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি ছিলেন একজন সফল সাহিত্যিক যিনি একুশটি পুস্তক রচনা করেন।
★ ব্যবসা:- ব্যক্তিজীবনে তিনি আতর, মধু ও বই বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করতেন।
★ ইসলাম গ্রহণ:- তার পবিত্র হাতে হাত রেখে প্রায় ১০০ জন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পবিত্র ইসলামের মহান ছায়াতলে আশ্রয় নেন।
★ মাসিক দ্বিন দুনিয়া:- বাংলা ভাষায় পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফ চর্চা সহ সাহিত্যের কলমসৈনিক তৈরীর মানুষে ২৮ জুন ১৯৮০ সালে প্রকাশ করলেন ইসলামী মননশীল পত্রিকা "মাসিক দ্বিন দুনিয়া" । বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই মননশীল ইসলামী পত্রিকার প্রধান সম্পাদকবিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এ.কে. মাহমুদুল হক এবং সম্পাদক হচ্ছেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী অকুতোভয় কলম সৈনিক মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ স্যার। (আমার শ্রদ্ধাভাজন প্রিয় শিক্ষক মন্ডলীর মাঝে অন্যতম ব্যক্তিত্ব)
★ বর্তমানে, পীর আল্লামা শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার ছাহেব রাহ এর রেখে যাওয়া এ কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনা করছেন, তারঐ স্নেহধন্য বাহারুল উলুম শাহ্ সূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন ছাহেব (মা.জি.আ) পীর ছাহেব বায়তুশ শরফ, বাংলাদেশ।
★ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা:-
আল্লামা শাহ্ আব্দুল জব্বার ছাহেব রাহ. আধ্যাত্নিক শিক্ষা দানের পাশাপাশি মুসলমানরা দুনিয়াতে যেন সুন্দর ও নিস্কুলুস জীবন যাপন করতে পারেন সেই পথের সন্দ্বান দিতেও সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। সুদ ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্হা যে দেশে প্রচলিত সে দেশে শুধু সুদ হারাম এ কথা মুখে বললেই হবেনা, সুদ থেকে মুক্তি লাভের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। তাঁর এই চিন্তা থেকে ১৯৮১ ঈসায়ী সালের ২৬ এপ্রিল তাঁর একান্ত উদ্যোগে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে বেসরকারিভাবে বায়তুশ শরফ ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিলনায়তনে " সুদবিহীন ইসলামি ব্যাংক " প্রতিষ্ঠার উপর একটি জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারকে কেন্দ্র করে ২৯৮৩ ঈসায়ী সালে বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি এ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও শরীয়া কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। সমাজ কর্ম ও ধর্মীয় জেহাদের একটি উজ্জ্বল ফলক হিসেবে ইহা চির ভাস্কর ও চির অম্লান হয়ে থাকবে।
চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে তাঁর মেধা সাহসিকতার বিচক্ষণতা, অধিকন্ত সুদুর প্রসারী চিন্তা ধারা। এ উদ্দেশ্যে তাঁর একান্ত আয়োজনে ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯২ ঈসায়ী সালে বায়তুশ শরফ ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিলনায়তনে এক সেমিনারের আয়োজন করেন। এ সেমিনারের আলোকে ৬অক্টোবর ১৯৯২ ঈসায়ী সালে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট " ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটি " নামে একটি কমিটি গঠন করেন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার রাহ. এর কর্মতৎপরতায় প্রভাবিত হয়ে সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২ এর অধীনে ১৯৯৫ ঈসায়ী সালে "চট্টগ্রাম ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় " প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের সভাপতি আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার রাহ. ১৯৯৫ ঈসায়ী সালের আগষ্ট মাসে মাত্র ৩ টি ফ্যাকাল্টির আওতায় ৩টি বিভাগ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্ভোধন করেন। যা বর্তমানে " আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় - চট্টগ্রাম " নামে বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।
★ওফাত:- ২৫ মার্চ ১৯৯৮ ঈসায়ী সালে তিনি চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফে নিজ হুজরায় (সকাল ৭-১৫ মিনিটে ) ইন্তেকাল করেন। ( ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্না ইলায়হে রাজেউন) পরবর্তী দিন ২৬ শেষ মার্চ রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড ময়দানে সকাল ১০টার সময় তাঁর সুযোগ্য ছাহেবজাদা আলহাজ্ব মাওলনা মোহাম্মদ আবদুল হাই নদভী ছাহেব এর ইমামতিতে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, এবং নামাজে জানাযা শেষে চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ মসজিদ সংলগ্ন তার নিজের হাতে গড়া ফুল বাগানে তাঁকে দাফন করা হয়। এবং এপর্যন্ত প্রতিনিয়ত তার মাজার শরীফে বিভিন্ন স্থান হতে ভক্তবৃন্দ ও শুভাকাঙ্ক্ষী গণেসে জিয়ারত করে রুহানি ফুয়ুজাত হাসিল করছেন।
★ ছোটবেলায় প্রথম যখন মাদরাসাতে ভর্তি হই আব্বাজানের সাথে গিয়েছিলাম, হুজুর (শাহ্ সূফী আবদুল জব্বার ছাহেব রাহ,) আমাকে দেখে কোলে তুলে নিয়েছিলেন এবং দোয়া করেছিলেন। আল্লাহর একজন ওলী বন্ধুর স্নেহধন্য পরশ অবশ্যই বরকতের বিষয়। আজ হুজুরের ওফাত দিবসে, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এবং সাথে সাথে সবাই কে বলব যারা এই সংকলিত পোস্টটি পড়েছেন, আমি সমস্ত হকপন্থী অলি-আউলিয়াদের সম্মান করি ও মুহব্বত করি। কারণ ইসলাম আমরা পেয়েছি সুফিসাধক অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে তাদের শ্রদ্ধা করা সম্মান করা প্রত্যেকের ঈমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য।
মহান আল্লাহ তাবারক ওতালা তালা হুজুরকে পবিত্র জান্নাতুল ফেরদৌসে দাখিল করুন। আমীন।

আমরা কি আরেকটি দুর্ভিক্ষ ডেকে আনছি?


বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৯৪৩ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষে প্রায় ৪০ লাখ লোক মৃত্যু বরণ করেছিলেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে যে ধরনের আতঙ্ক ও অচল অবস্থা বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তাতে আরেকটি দুর্ভিক্ষ আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
আমার এই আশঙ্কা না ফলুক এটাই প্রত্যাশা করি। কিন্তু তারপরও কেন যেন মনে হচ্ছে আমরা আরেকটি দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
করোনা ভাইরাসের ক্ষতি পোষাতে কানাডা সরকার বিশাল প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি আরব আজকে ১২০ মিলিয়ন রিয়ালের বিশাল প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছে। ঐ সমস্ত দেশের আর্থিক সক্ষমতা যেমন আছে ঠিক তেমনি সাধারণ জনগণের আচরণগত দিকগুলো আমাদের চেয়ে অনেক অনুকূলে।
বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কথা নয় কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের আচরণই দুর্ভিক্ষ ডেকে আনবে। কারণ:
ক. আমরা আতঙ্ক আসার আগেই আতঙ্কিত হই বেশি। রোজা আসার আগে যেভাবে বাজারে হুমরি খেয়ে পড়ি এটা অন্য কোথাও নেই। সংকট আসার আগেই সবাই বাজারে এমনভাবে আচড়ে পড়ি যেন আজ না কিনলে কাল আর কিনতে পাব না এই অবস্থা!
খ. আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা মাশা আল্লাহ! দুনিয়ায় এই ধরনের ব্যবসায়ী আর পাওয়া যাবে না। এরা সংকটের জন্য অধীর আগ্রহে থাকে। যখন কোন সংকট তৈরি হওয়ার আশংকা থাকে তখনই এরা সকল পন্য কুক্ষিগত করে বাজারকে অস্থির করে ফেলে। একদিনেই তারা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
গ. এ দেশের সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রন না আছে জনগণের ওপর না আছে ব্যবসায়ীদের ওপর না আছে প্রশাসনের ওপর। সরকার যতই গরম বুলি আওড়ায় তাতে কেউ কান লাগায় না, পরোয়া করে না।
ঘ. কারো কোন দায়বদ্ধতা নেই। সবাই লাগাম হীন। যে যেখান থেকে পারছে নিজের আখের গুছানোর মানসিকতা এখন ভর করেছে প্রায় সকলের মধ্যে।
একটা উদাহরণ দেই:
-------------------------
গত তিন দিন আগে ফুটপাতে ভালো মানের পিয়াজ ৪০/৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। তার মানে পিয়াজের গুদাম উপচে পড়ছে এখন। তাই ব্যবসায়ীরা পিয়াজ ছেড়ে দিয়েছেন। দামও নাগালে চলে এসেছিল। কিন্তু সেই পেয়াজের দাম এখন আবার ৮০/৯০ টাকার দিকে চলে গেছে। কারণ বুঝতেই পারছেন। করোনার আতঙ্কে জনগণ পিয়াজ, ডাল-চালের ওপর হুমরি খেয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা দেখলেন এখনই সুযোগ। দাম বাড়িয়ে দিলেন তারা। আজকে চালের দোকানে গেলাম। দোকানদার বললেন, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা চাল ছাড়ছে না। আগে আমাদের হাত পা ধরে চাল দিত ৩৫০ বস্তা একবারে। এখন আমি সারা খাতুনগঞ্জ ঘুরে ঘুরে ১২০ বস্তা চাল এনেছি। গেলাম কাচা বাজারে । মাছ বিক্রেতারা মিছিল দিয়ে বলছে: মরার আগে খাইয়া লন.......
যাইহোক, একটু বাস্তব অবস্থা কল্পনা করে দেখুন। করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপি যে মন্দা দেখা দিবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। অন্যান্য ধনী দেশ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে সামাল দিতে পারলেও আমাদের মত গরীব দেশ তা পারবে না।
১৯৪৩ সালের যে মহা দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তার অনেকগুলো কারণ ছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যবসায়ীদের মজুদদারী এবং অতি আতঙ্কিত জনগণের অতিরিক্ত পণ্য ক্রয়।
এখন একটু চিন্তা করুন। চীন, ভারত ও মায়ানমার থেকে যখন পুরোপুরি আমদানি বন্ধ হবে। আমাদেরকে যখন নিজেদের পণ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে তখন কী হবে? একদল আতঙ্কিত লোক বাজারের সকল পণ্য কিনে ঘর বোঝাই করবে। আরেকদল মুনাফাখোর ব্যবসায়ী পয়সা লোটার ধান্ধায় পণ্য মজুত করে দাম বাড়াবে। ফল হিসেবে আমরা আরো একটি মহা দুর্ভিক্ষ দেখব! তবে সেই দুর্ভিক্ষ হবে কঠিন থেকে আরো কঠিনতর। কেননা গোটা বিশ্বই একই সময়ে সংকটে থাকবে। বাংলাদেশ একা বিপদে থাকলে হয়ত কেউ দান খয়রাত নিয়ে এগিয়ে আসত। তখন তারা থাকবে নিজেদের ঘর সামলানোতে ব্যস্ত আমাদের হেল্প করবে কখন?
এখন উপায়?
উপায় আছে। আমাদের কাছেই আছে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের। আমাদের চরিত্র বদল করতে হবে। যতই রিউমার ছড়ানো হোক বাজারে হুমরি খেয়ে পড়া যাবে না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত এক ছটাক বস্তুও কেনা যাবে না। ব্যবসায়ীদেরও মানসিক পরিবর্তন জরুরি। উনাদের মানসিক বিকার না গেলে আমরা বাচতে পারব না।
উনাদের অতি লোভে যদি দুর্ভিক্ষ হয়েই বসে তখন কিন্তু তারাও ছাড়া পাবে না। দেশ গোল্লায় গেলে তাদের ধন দিয়ে কী হবে!
আল্লাহ আমাদের সুমতি দিন। মহামারীকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ব্যবসা না করে মানুষের খেদমত করা যায় কিনা সেই মানসিকতা আল্লাহ দান করুন এই দোয়া করি।
হে আল্লাহ বাংলাদেশের মানুষকে তুমি মানুষ কর। ওদেরকে সহিহ বুঝ দাও। করোনা থেকে বাচাও। দুর্ভিক্ষ যেন আমাদের না পেয়ে বসে সেই ব্যবস্থা করে দাও.....

আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমি দায়ী নই। আমার রব বলেছেন, তোমরাই দায়ী: করোনা

"প্রিয় মানবতা,
.
নিজেকে আমার নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজনবোধ করি না। গোটা পৃথিবী আজ আমাকে নিয়ে কথা বলছে, গৃহবন্দী আজ আমারই জন্যে, অবিরাম দুশ্চিন্তা আজ আমাকে ঘিরে। তোমাদের অধিকাংশের ন্যায় নষ্ট করার মতো সময় আমার হাতে নেই। তাই মূল কথায় যাচ্ছি, আজ নিজের সম্বন্ধে তোমাদের এমন কিছু বিষয় শেয়ার করতে চাই, যা মিডিয়া ধারণ করবে না কোনো দিন।
.
মানুষের মাঝে ভেদাভেদ করতে আমি জানি না। আমি চিনি না কে যুবক আর কে বৃদ্ধ, কে অসুস্থ আর কে সুস্থ, কে নেককার আর কে বদকার। ধ্বংসাত্মক বলে আমায় দোষীয়ো না তোমরা। আমি স্রেফ মহান রবের নির্দেশের পাবন্দি করছি, যিনি আমাকে করে দিয়েছেন লাগামছাড়া।
.
মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর যালেম শাসকদের নির্যাতনের স্টিমরোলার আজ আমিই থামিয়ে দিয়েছি, ব্যস্ত করে রেখেছি আজ তাদের ভিন্ন কিছুতে। আমিই একুশ শতকের ফিরআউনদের হতবিহবল করে তুলেছি এবং গুঁড়িয়ে দিয়েছি তাদের প্রত্যেকের অহংকারী মেরুদণ্ড। আমিই বন্ধ করিয়েছি মদ, যিনা-ব্যভিচার, আর জুয়া-মাদকের আড্ডাখানা। সুদী কারবার-কারীদের ভীত সন্ত্রস্ত করে রেখেছি আমিই। দরজার ওপারে থাকা প্রত্যেক অবিশ্বাসীকে আমিই হয়রান করে রেখেছি, ফলে এতকাল সে যত পক্ষ নিয়ে দাঁড়াত, আজ সবই তার কাছে দিকহারা। আমিই সেই ভাইরাস, ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে প্রত্যেক পাপাচারীর মনে এবং বাধ্য করেছে তাদের আফসোস আর অনুশোচনা করতে। নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিফল আমিই। আর এ জন্য আমি গর্ববোধ করি, কোনো দুঃখ নেই আমার মনে। বরং শক্ত হয়ে পড়া মানবতার সেই অন্তরগুলোর জন্যই লজ্জা, উপদেশ-গ্রহণে যাদের প্রয়োজন হলো আমার মতো বান্দার।
.
হ্যাঁ, তোমরা ঠিকই ধরেছেন।
.
আজ আমার কারণে মসজিদের দরজাগুলো বন্ধ। আর এটাই আমার দুঃখ, তবে এটা আমার রবেরই মর্জি, নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞাতা। আশা করি আজ তোমরা অনুধাবন করতে পারবে, জামাতে সালাত আদায়ের কী মহত্ত্ব, ফেরেশতাদের সাথে বসতে পারা কত বড় সৌভাগ্যের, এতকাল তোমরা উপভোগ করছিলে শোকর ছাড়া। কেন? কেন আমাকেই তোমাদের প্রয়োজন হলো এই বিষয়টি বোঝাতে?
.
তোমাদের গোটা জীবনযাত্রা আজ আমার কারণে দেয়ালে পীঠ ঠেকে গেছে; দুর্বল, অণুবীক্ষণ যন্ত্র বিনা যাকে দেখাই যায় না, আল্লাহর এই নীরব সৃষ্টির কারণে। তাহলে কেমন হতো, আমাকে না পাঠিয়ে যদি আমার ভাইদের পাঠাতেন তিনি? গোটা শহরকে উল্টে দিতেন, যেভাবে দিয়েছেন কওমে লূতকে? কিংবা আগুনের বৃষ্টি যদি বর্ষণ করতেন, যেভাবে করেছিলেন কওমে শুয়াইবের ওপরে? অথবা জমিনকে যদি নির্দেশ দিতেন তোমাদের ধসিয়ে দিতে, যেভাবে দিয়েছিলেন কারুনকে?
.
আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমি দায়ী নই। আমার রব বলেছেন, তোমরাই দায়ী।
.
‘সুতরাং ওদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ অপরাধের জন্য পাকড়াও করলাম; ওদের কারও প্রতি প্রেরণ করলাম পাথর বর্ষণকারী ঝড়, কাউকে আঘাত করল মহাগর্জন, কাউকে আমি ধসিয়ে দিলাম মাটির নিচে এবং কাউকে মারলাম ডুবিয়ে। আল্লাহ তাদের প্রতি কোনো যুলুম করেন নি; অধিকন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে।’ [সূরা আনকাতবূত, ২৯: ৪০]
.
আমাকে ভয় করো না, বরং তাঁকে ভয় করো, আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন।
.
দিশেহারা হয়ে যেও না এই ভেবে, কীভাবে আমার থেকে বাঁচবে। বরং ভাবো, কীভাবে তাঁর নিকটবর্তী হওয়া যায়, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তোমাদের কাছে।
.
আমি সহ গোটা সৃষ্টি জগত তাঁরই দয়ার অনুগামী, তাঁরই ক্ষমতার অধীন, তাঁর সাহায্য বিনা আমরা অক্ষম সকলেই। আমার ভাগ্য তাঁরই হাতে, তাঁর ইচ্ছাই আমার কাছে চির-ধার্য, আর আমি সিজদাহ করি শুধুমাত্র তাঁকেই। অতএব আমাকে নিয়ে কিংবা অন্য কিছু নিয়ে তোমাদের অন্তরগুলো ব্যতিব্যস্ত করে রেখো না। আল্লাহর গুণকীর্তন করো এবং তাঁর প্রতি সুধারণা রাখো।
.
তোমাদের চাইতে আমি নিজেকে ভাল জানি। যারা নেককার অবস্থায় মৃত্যুবরণ করছে, আল্লাহর কাছে তাদের জন্য উত্তম ফলাফলই অপেক্ষা করছে। আশা করা যায় তারা শহীদের মর্যাদা পাবে। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানের ব্যাপারে গাফেল থেকে মরছ, লক্ষ্যহীন জীবন কাটিয়েছ, তাওবাহ করতে বিলম্ব করেছ, খুব শীঘ্রই তোমরা বুঝতে পারবে মৃত্যু আসল সমস্যা নয়, বরং সবচেয়ে ক্ষীণ সমস্যাগুলোর একটি।
.
তোমাদের প্রতি দয়াপরবশ আজ আমি মুখ খুলেছি, অতএব শেষবারের মতো জানতে চাইব:
.
তোমরা কি তাওবাহ করবে?
.
জীবনের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য নিয়ে ভাববে? লক্ষ্য নিয়ে জীবন যাপন করবে?
.
তোমরা কি এ কথা দিতে পারো, প্রত্যেক পাপকে তোমরা বুকফাটা অনুশোচনা দিয়ে বিদায় জানাবে?
.
তোমাদের ক্ষণিকের অতিথি, নিরেট উপদেশ দানকারী, আল্লাহর অধম বান্দা,
.
‘করোনা’
.
-----------
উস্তাদ আলী হাম্মুদার পেইজ থেকে
অনুবাদ: Wafilife এ্যাডমিন

গজবে ধ্বংস হওয়া ৬ জাতি

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুসারে আল্লাহর নির্দেশিত পথ অনুসরণ না করায় কয়েকটি জাতি রাতারাতি ধুলায় মিশে গেছে।
আল্লাহর গজব বর্ষিত ৬টি জাতি
১. মাদইয়ান সম্প্রদায়
হযরত শোয়াইব (আ.) প্রেরিত হয়েছিলেন মাদইয়ান সম্প্রদায়ের কাছে। তিনি ছিলেন হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর তৃতীয় স্ত্রী কাতুরার ঘরের পুত্র মাদইয়ানের বংশধর। ধারণা করা হয়, বর্তমান সিরিয়ার মুয়ান নামক স্থানে কওমে শোয়াইবের বসবাস ছিল।
মাদইয়ানবাসী পার্থিব লোভ-লালসায় মত্ত হয়ে পারস্পরিক লেনদেনের সময় ওজনে কম দিয়ে মানুষের হক আত্মসাৎ করত। দুর্নীতি, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণ ও মজুদদারির মতো জঘন্য অন্যায় কাজ তাদের সমাজের মধ্যে বিষবাষ্পের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এসব পাপে তারা এমনভাবে লিপ্ত ছিল যে, তারা কখনো মনে করত না যে, এসব কাজ অত্যন্ত জঘন্য বা গর্হিত। বরং তারা এসবের জন্য গর্ববোধ করত। মাদইয়ান সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহ তায়ালা শোয়াইব (আ.)-কে তাদের কাছে পাঠান। হযরত শোয়াইব (আ.) সর্বপ্রথম তাদের তাওহিদের দাওয়াত দিলেন। তিনি তাদের বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহতায়ালার ইবাদত কর, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই।’ তাওহিদের দাওয়াত দেওয়ার পরপরই হযরত শোয়াইব (আ.) তাদের ওজনে কম দেওয়ার জঘন্য মানসিকতাকে ত্যাগ করার উপদেশ দিলেন।
তিনি তাদের ওজনে কম না দেওয়ার অনুরোধ জানালেন। তিনি আরও বলেন, আজ আমি তোমাদের সচ্ছল ও ভালো অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু আমি তোমাদের ব্যাপারে পরিবেষ্টনকারী দিনের আজাবের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। হে আমার কওম! ওজনে কম দিও না এবং লোকদের সঙ্গে প্রতারণা কোরো না। আর সমাজের বুকে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি কোরো না।
এ থেকে বোঝা যায়, ওজনে কম দেওয়া যেমন হারাম, তেমনি অপরের অধিকারে হস্তক্ষেপ করাও হারাম। হযরত শোয়াইব (আ.) তাদের আরও উপদেশ দিলেন, মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের সম্পদ কেড়ে নেওয়ার জন্য রাস্তাঘাটে ওঁৎ পেতে অপেক্ষা কোরো না। কিন্তু উপদেশের বিনিময়ে কেবল উপহাস-পরিহাসই পেয়েছেন শোয়াইব (আ.)। অবশেষে তারা যখন সীমালঙ্ঘন করে ফেলল তখন আল্লাহ তায়ালার গজব এসে গেল। কয়েক দিন তাদের অঞ্চলে প্রচ- গরম পড়ল। গরমে তারা ছটফট করতে লাগল। অতঃপর কাছাকাছি একটা ময়দানের ওপর গাঢ় মেঘমালা দেখা দিল। ময়দানে মেঘের ছায়া পড়ল। শীতল বাতাস বইতে লাগল। এলাকার সবাই ওই ময়দানে উপস্থিত হলো। বলতে লাগল, এই মেঘ থেকে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হবে। কিন্তু তাদের ওপর অগ্নিবৃষ্টি শুরু করল। আর নিচের দিকে শুরু হলো প্রচ- ভূমিকম্প। ফলে সবাই সেখানে ধ্বংস হয়ে গেল।
২. হুদ (আ.)-এর আদ জাতি
আদ জাতির লোকেরা ছিল উন্নত। নির্মাণশিল্পে তারা ছিল জগৎসেরা। তারা সুরম্য অট্টালিকা ও বাগান তৈরি করত। তাদের তৈরি ইরাম-এর মতো অনিন্দ্য সুন্দর শহর পৃথিবীর আর কোথাও ছিল না। তারা অঙ্কন শিল্পেও ছিল দক্ষ। জ্ঞান-বিজ্ঞানে তারা যেমন অগ্রসর ছিল, তেমনি সংস্কৃতিতেও অনন্য।
শুরুর দিকে আদরা হযরত নুহ (আ.)-এর ধর্মমত মেনে চলত। তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করত। কিন্তু কালক্রমে তারা আল্লাহকে ভুলে যেতে শুরু করে। তারা মনে করত, তাদের সব অর্জন স্বীয় যোগ্যতায়।
আদরা ভুলে গেল যে, আল্লাহ বা স্রষ্টা বলতে কেউ আছেন। তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা যে আল্লাহই তাদের দিয়েছেন, তাও তারা বেমালুম ভুলে গেল। ফলে তারা অহংকারী হয়ে উঠল এবং সত্যিকারের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ল।
আদ জাতির লোকদের সতর্ক করার জন্য আল্লাহ হযরত হুদ (আ.)-কে দুনিয়ায় পাঠালেন। হযরত হুদ (আ.) আদ জাতির লোকদের গর্ব পরিত্যাগ করার আহ্বান জানালেন এবং আল্লাহর ইবাদত করার উপদেশ দিলেন। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে জীবন পরিচালনার কথাও বললেন। হযরত হুদ (আ.) বললেন, ‘তোমরা মজবুত অট্টালিকা বানিয়েছ এ জন্য যে, তোমরা এখানে চিরকাল থাকবে। তোমরা যখন তোমাদের দুর্বলের ওপর জুলুম করো তখন তোমরা স্বৈরশাসকের মতো বর্বর আচরণ করো। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমাকে মান্য করো।
কিন্তু লোকেরা হুদ (আ.)-এর কথা শুনল না, বরং তারা তার কথা প্রত্যাখ্যান করল। তাকে বোকা ও মিথ্যাবাদী বলে গালাগাল দিল। নবীর প্রতি এরূপ অন্যায় আচরণে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হলেন। ফলে আদদের এলাকায় দেখা দিল প্রচণ্ড খরা। এতে তিন বছর তারা দুর্ভিক্ষের মধ্যে কাটাল। তারপরও তাদের স্বভাব-চরিত্রে কোনো পরিবর্তন হলো না। এবার সেখানে শুরু হলো ভয়ানক ঝড়। এই ঝড় সাত রাত ও আট দিন ধরে চলল। ফলে গোটা আদ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো। আল্লাহ তার রহমতে হযরত হুদ (আ.) ও তার অনুসারীদের রক্ষা করলেন।
৩. লুত (আ.)-এর জাতি
বিকৃত পাপাচারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল লুত (আ.)-এর জাতি। ইরাক ও ফিলিস্তিনের মধ্যবর্তী স্থানে এই জাতিটির বসবাস ছিল। এই জাতির কেন্দ্রীয় শহর ছিল ‘সাদুম’ নগরী। সাদুম ছিল সবুজ শ্যামল এক নগরী। কারণ এখানে পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ ছিল। ফলে ভূমি ছিল অত্যন্ত উর্বর এবং শস্যে ভরপুর। এমন প্রাচুর্যময় জীবনযাত্রা বেপরোয়া করে তোলে তাদের। শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে তাদের মধ্যেই সর্বপ্রথম সমকামিতার প্রবণতা দেখা দেয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এই জঘন্য অপকর্ম তারা প্রকাশ্যে করে আনন্দ লাভ করত।
অবশেষে একদিন আল্লাহর গজব নাজিল হয় ওই পাপাচারী জাতির বিরুদ্ধে। তাদের ওপর মহাপ্রলয় নেমে আসে। এক শক্তিশালী ভূমিকম্প পুরো নগরটি সম্পূর্ণ উল্টে দেয়। ঘুমন্ত মানুষের ওপর তাদের ঘরবাড়ি আছড়ে পড়ে। পাশাপাশি আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো কঙ্কর নিক্ষিপ্ত হতে থাকে। ওই মহাপ্রলয়ের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। ওই জনপদের ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান।
লুত (আ.)-এর জাতির ধ্বংসস্থলটি বর্তমানে ‘বাহরে মাইয়েত’ বা ‘বাহরে লুত’ নামে খ্যাত। এটি ডেড সি বা মৃত সাগর নামেও পরিচিত। ফিলিস্তিন ও জর্দান নদীর মধ্যবর্তী স্থানে বিশাল অঞ্চলজুড়ে নদীর রূপ ধারণ করে আছে এটি। জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ নিচু। এর পানিতে তেলজাতীয় পদার্থ বেশি। এতে কোনো মাছ, ব্যাঙ, এমনকি কোনো জলজ প্রাণীও বেঁচে থাকতে পারে না। এ কারণেই একে ‘মৃত সাগর’ বলা হয়।
সাদুম উপসাগরবেষ্টিত এলাকায় এক ধরনের অপরিচিত উদ্ভিদের বীজ পাওয়া যায়, সেগুলো মাটির স্তরে স্তরে সমাধিস্থ হয়ে আছে। সেখানে শ্যামল উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যার ফল কাটলে তার মধ্যে পাওয়া যায় ধুলাবালি ও ছাই।
এখানকার মাটিতে প্রচুর গন্ধক পাওয়া যায়। এই গন্ধক উল্কাপতনের অকাট্য প্রমাণ। ১৯৬৫ সালে ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানকারী একটি আমেরিকান দল ডেড সির পার্শ্ববর্তী এলাকায় এক বিরাট কবরস্থান দেখতে পায়, যার মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি কবর আছে। এটি থেকে অনুমান করা হয়, কাছেই কোনো বড় শহর ছিল। কিন্তু আশপাশে এমন কোনো শহরের ধ্বংসাবশেষ নেই, যার সন্নিকটে এত বড় কবরস্থান হতে পারে। তাই সন্দেহ প্রবল হয়, এটি যে শহরের কবরস্থান ছিল, তা সাগরে নিমজ্জিত হয়েছে।
সাগরের দক্ষিণে যে অঞ্চল রয়েছে, তার চারদিকেও ধ্বংসলীলা দেখা যায়। জমিনের মধ্যে গন্ধক, আলকাতরা, প্রাকৃতিক গ্যাস এত বেশি মজুদ দেখা যায় যে এটি দেখলে মনে হয়, কোনো এক সময় বিদ্যুৎ পতনে বা ভূমিকম্পে গলিত পদার্থ বিস্ফোরণে এখানে এক ‘জাহান্নাম’ তৈরি হয়েছিল।
৪. সালেহ (আ.)-এর সামুদ সম্প্রদায়
সামুদ জাতি শিল্প ও সংস্কৃতিতে পৃথিবীতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আদ জাতির পর তারাই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সমৃদ্ধিশালী জাতি। কিন্তু তাদের জীবনযাপনের মান যতটা উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল, মানবতা ও নৈতিকতার মান ততই নিম্নগামী ছিল। একদিকে উন্মুক্ত প্রান্তরে পাথর খোদাই করে করে প্রাসাদের পর প্রাসাদ তৈরি হচ্ছিল, অন্যদিকে সমাজে কুফর, শিরক ও পৌত্তলিকতার প্রসার ঘটছিল। অন্যায় ও অবিচারে সমাজ জর্জরিত হতে থাকে। সমাজে চরিত্রহীন লোকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। হজরত সালেহ (আ.) যে সত্যের দাওয়াত দিয়েছেন, তাতে নিম্ন শ্রেণির লোকেরাই সাড়া দেয়। হিজর ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় আবাসস্থল। এর ধ্বংসাবশেষ মদিনার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমান শহর আল উলা থেকে কয়েক মাইল ব্যবধানে তা দেখা যায়।
সালেহ (আ.) সারা জীবন তাদের হেদায়েতের পথে আনার চেষ্টা করেছেন। এতে অল্প কিছু সঙ্গী ছাড়া গোটা জাতি তার অবাধ্যই থেকে যায়। একপর্যায়ে তারা দাবি করে, আপনি যদি সত্যি নবী হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের ‘কাতেবা’ নামের পাথরময় পাহাড়ের ভেতর থেকে একটি ১০ মাসের গর্ভবতী, সবল ও স্বাস্থ্যবতী মাদি উট বের করে দেখান। এটি দেখাতে পারলে আমরা আপনার ওপর ইমান আনব। সালেহ (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আল্লাহর কুদরতে পাহাড় থেকে একটি অদ্ভুত রকমের মাদি উট বের হয়। তা দেখে কিছু লোক ইমান আনে। কিন্তু তাদের সর্দাররা ইমান আনেনি, বরং তারা সে মাদি উটকে হত্যা করে ফেলে। এতে সালেহ (আ.) তার জাতির ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসার ঘোষণা দেন। তিনি তাদের সতর্ক করে দেন যে তিন দিন পরই আল্লাহর আজাব তোমাদের ধ্বংস করে দেবে।
নির্ধারিত সময়ে আসমানি আজাব এসে অবিশ্বাসীদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারপর সীমা লঙ্ঘনকারীদের মহানাদ আঘাত করে। ফলে তারা নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে থাকে (ধ্বংস হয়ে যায়)। যেন তারা কখনোই সেখানে বসবাস করেনি। উদ্ধত সামুদ জাতির প্রতি হজরত সালেহ (আ.)-এর হুঁশিয়ারি সত্যি বাস্তবায়িত হয়েছে। হঠাৎ একদিন প্রচণ্ড শব্দে ভূমিকম্প তাদের নাস্তানাবুদ করে ফেলে। বজ্রপাতের ভয়ংকর শব্দে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত হয়ে যায়। অবশেষে তাদের অপমৃত্যু ঘটে।
৫. নুহ (আ.)-এর জাতি
নুহ (আ.)-এর জাতি মূর্তিপূজা করত। আল্লাহ তায়ালা নুহ (আ.)-কে সুদীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। তিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মূর্তিপূজা ত্যাগ করতে বলেছেন। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী অক্লান্তভাবে দাওয়াত দেওয়ার পরও তারা ইমান আনেনি। তিনি তার জাতিকে সত্যের পথে আনতে দীর্ঘ ৯৫০ বছর নিরলস চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু তারা নুহ (আ.)-এর দাওয়াত তাচ্ছিল্যভরে প্রত্যাখ্যান করে। তারা তাকে বলেছিল, ‘হে নুহ! যদি তুমি বিরত না হও, তবে পাথর মেরে তোমার মস্তক চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।’
বহু চেষ্টায় অল্পসংখ্যক মানুষ তার পথে এসেছিল। তার সময়ের সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা তার কথায় কর্ণপাত করেনি। নুহ (আ.) তাদের আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেন। তবু তাদের চৈতন্যোদয় হয়নি। অবশেষে আল্লাহর আজাব আসে। এক ভয়ংকর প্লাবন ও জলোচ্ছ্বাস তার জাতির অবাধ্য লোকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এমন প্লাবন সেই জাতিকে গ্রাস করেছিল, যেই প্লাবন হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে ইতিহাস হয়ে আছে। তখন নুহ (আ.)-এর নৌকায় যারা আশ্রয় নিয়েছিল তারাই রক্ষা পেয়েছিল।
৬. মুসা (আ.)-এর জাতি
নিজেকে খোদা দাবি করেছিল ফেরাউন। তার কাছে ইমানের দাওয়াত নিয়ে গিয়েছিলেন মুসা ও হারুন (আ.)। বিনিময়ে মুসা (আ.)-কে হত্যা করতে মনস্থির করে ফেরাউন। সদলবলে ফেরাউন একদিন মুসা (আ.)-কে ধাওয়া করে। তিন দিকে ঘেরাও হওয়া মুসার দলের সামনে ছিল উত্তাল সাগর। আল্লাহর হুকুমে সাগরে পথ সৃষ্টি হয়। নিজের দল নিয়ে মুসা (আ.) এই পথ দিয়ে সমুদ্র পার হয়ে যান। কিন্তু সাগরে ডুবে মারা যায় ফেরাউন। আল্লাহ তাকে পৃথিবীবাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হিসেবে রেখে দিয়েছেন। তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় সাগরে নিমজ্জিত থাকার পরও তার লাশে কোনো পচন ধরেনি।
জানা যায়, ১৮৯৮ সালে কিংস ভ্যালির থিবিসে দ্বিতীয় রামাসিসের পুত্র ও মহাযাত্রাকালীন ফেরাউনের মমি করা লাশ আবিষ্কার করা হয়। সেখান থেকে তা কায়রোতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯০৭ সালের ৮ জুলাই মমিটির আবরণ অপসারণ করা হয়। কয়েকটি জায়গায় কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও মমিটি তখনো সন্তোষজনকভাবে সংরক্ষিত ছিল। তার গলা থেকে মাথা পর্যন্ত উন্মুক্ত অবস্থায় রেখে অবশিষ্ট দেহ কাপড়ে ঢাকা অবস্থায় দর্শকদের দেখার জন্য কায়রো জাদুঘরে রাখা আছে।
ঐতিহাসিক চিহ্ন-দ্রব্য সংরক্ষণ করা মানুষের স্বাভাবিক কর্তব্য। কিন্তু এ মমির ক্ষেত্রে সেই কর্তব্য অনেক বেশি বড় ও ব্যাপক হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ এ মমি হচ্ছে এমন একজনের লাশের বাস্তব উপস্থিতি, যে মুসা (আ.)-কে চিনত। তার পরও সে তার হেদায়েত প্রত্যাখ্যান করেছিল। আত্মরক্ষার্থে পলায়নকালে মুসার পশ্চাদ্ধাবন করেছিল এবং সেই প্রক্রিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে। আর কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী তার লাশ পরবর্তী সময় মানুষের জন্য নিদর্শনস্বরূপ। আল্লাহর হুকুমে তা ধ্বংস থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিম সাগরতীরে যেখানে ফেরাউনের লাশ সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, আজও জায়গায়টি অপরিবর্তিত আছে। বর্তমানে এ জায়গার নাম জাবালে ফেরাউন বা ফেরাউন পর্বত। এরই কাছাকাছি আছে একটি গরম পানির ঝরনা। স্থানীয় লোকেরা এর নাম দিয়েছে হাম্মামে ফেরাউন। এর অবস্থানস্থল হচ্ছে আবু জানিমের কয়েক মাইল ওপরে উত্তরের দিকে।
উম্মতের উদ্দেশ্যে রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তিনিটি দু’আ
باب مَا جَاءَ فِي سُؤَالِ النَّبِيِّ ﷺ ثَلاَثًا فِي أُمَّتِهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ رَاشِدٍ، يُحَدِّثُ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابِ بْنِ الأَرَتِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ ﷺ صَلاَةً فَأَطَالَهَا قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّيْتَ صَلاَةً لَمْ تَكُنْ تُصَلِّيهَا قَالَ ‏ "‏ أَجَلْ إِنَّهَا صَلاَةُ رَغْبَةٍ وَرَهْبَةٍ إِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ فِيهَا ثَلاَثًا فَأَعْطَانِي اثْنَتَيْنِ وَمَنَعَنِي وَاحِدَةً سَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُهْلِكَ أُمَّتِي بِسَنَةٍ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُذِيقَ بَعْضَهُمْ بَأْسَ بَعْضٍ فَمَنَعَنِيهَا ‏"‏ ‏.‏ ‏
আবদুল্লাহ ইবনু খাব্বাব ইবনুল আরাত (রাঃ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা খুব দীর্ঘায়িত করে নামায আদায় করেন। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আপনি তো কখনো এভাবে নামায আদায় করেননি! তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এ নামায ছিল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও ভীতিপূর্ণ। আমি এতে তিনটি বিষয়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট আবেদন করেছি। তিনি আমাকে দুটি দিয়েছেন এবং একটি দেননি। আমি তার নিকট আবেদন করেছি, তিনি আমার উম্মাতকে যেন দুর্ভিক্ষে নিক্ষেপ করে ধ্বংস না করে দেন। আমার এ দু'আ তিনি কুবুল করেছেন। তারপর আমি আবেদন করেছি যে, তিনি বিজাতীয় শক্রদেরকে যেন তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না দেন। আমার এ দু'আও তিনি কুবুল করেছেন। আমি আরো আবেদন জানিয়েছি যে, তারা যেন পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহের আস্বাদ না নেয়। আমার এ দুআ তিনি কুবুল করেননি।
সূনান আত তিরমিজী
অধ্যায়ঃ ৩১/ কলহ ও বিপর্যয় (كتاب الفتن عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ২১৭৫
মাসুদ পারভেজ

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র শুভেচ্ছা.

  বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  প্রতিবছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। তাই এ দিন সকল কালিমা আর কলুষতাক...