বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে ই পাসপোর্ট হাতে পেলাম। চট্টগ্রামে এখন ই-পাসপোর্ট দিচ্ছে। ভুলেও নতুন করে এমআরপি করতে যাবেন না অনেক লম্বা লাইন। যারা ই-পাসপোর্ট করবেন তাদের জন্য কয়েকটি টিপস।
# পুরো কাজটাই নিজে নিজে অনলাইনে করতে পারবেন সুতরাং কোন ধরনের দালাল ধরার দরকার নেই।
# ব্যাংকের কাগজটি অবশ্যই গাম দিয়ে লাগাতে হবে।
# আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকলেও আপনি নতুন করে এই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
# পাসপোর্ট আবেদন করার সময় আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয় মনে রাখতে হবে সেটি হচ্ছে পাসপোর্টটি আপনি কেন করছেন। আপনি যদি এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্টে কনভার্ট করেন সেক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকলেও কোনো অসুবিধা নেই।তবে আপনি যদি কোন ডাটা পরিবর্তন করতে চান সে ক্ষেত্রে ডাটা চেঞ্জ অপশন টি ক্লিক করে দিতে হবে।
# ই পাসপোর্ট ফরম পূরণ করার সময় আপনি দেখবেন কিছু কিছু জায়গা অপশনাল কিন্তু আপনি যখন ফরমটি সাবমিট করতে যাবেন তখন তারা আপনার অপশনাল জায়গাগুলো আপনি ফিলাপ না করলে আপনার ফর্মটি বাতিল করে দেবে। সেজন্য আপনি অপশনাল এবং কম্পলসারি সব ধরনের ফরম ফিলাপ করে যাবেন কোন ঘর বাকি রাখবেন না।
# যেদিন আপনাকে অ্যাপার্টমেন্ট দিবে সেদিন সঠিক সময়ে লাইনে দাঁড়াবেন আধা ঘন্টার মধ্যে আপনার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
# মনে রাখবেন একবার অনলাইনে ফরম পূরণ করে ফেললে আপনি কোনোভাবেই চেঞ্জ করতে পারবেন না। যদি চেঞ্জ করতে হয় কারণ আপনি যদি কোনো ভুল করেন তবে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদনটি ক্যানসেল করতে হবে। তারপর 24 ঘন্টা পরে আপনি আবার সংশোধন করে আবেদন করতে পারবেন সুতরাং কনফার্ম করার আগে অবশ্যই সবকিছু দেখে শুনে নেবেন।
# ছবি এবং বায়োমেট্রিক করতে শুধু মাত্র আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা সময় লাগে।
# জরুরী কিংবা এক্সপ্রেস পাসপোর্ট করার দরকার নেই । শুধু শুধু কিছু এক্সট্রা টাকা আপনার খরচ হবে আমি নিজে এক্সপ্রেস এর জন্য আবেদন করেছি পেয়েছি 17 দিন পর আর আমার সাথে আমার আরেকজন বন্ধু আবেদন করেছে নরমাল উপায়ে তিনি 7 দিনের মধ্যে পেয়েছেন কারণ কি আমি নিচে বলছি।
# ই পাসপোর্ট আবেদন ফিলাপ করার শেষ হলে আপনাকে একটি এপোয়েন্টমেন্ট লেটার ইমেইলে দিবে সেটি অবশ্যই আপনাকে প্রিন্ট করতে হবে এবং সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
# আপনারই পাসপোর্ট এর আবেদন টি প্রিন্ট করার সময় অবশ্যই দেখবেন আবেদনটির নিচে যেন বারকোড স্পষ্টভাবে প্রিন্ট হয়ে আসে। আবেদনের প্রথম পেজের নিচে এই বারকোড দেখা যাবে।
# অনেকে গিভেন নেম এবং ফ্যামিলি নেম এর জায়গা খালি রাখেন । সে ক্ষেত্রে সেটি অপশনাল বলে অনেকে মনে করেন সেটি পূরণ না করলেও চলবে কিন্তু আপনি পূরণ না করে যদি আবেদনপত্র জমা দিতে যান তবে আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হবে না বাতিল বলে গণ্য হবে।
# আবেদনের সময় যে ইমেইল আইডিটা দিবেন এবং ফোন নাম্বারটি দিবেন সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইমেইলে আপনাকে বিভিন্ন তথ্য পাঠাবে সুতরাং ইমেইল আইডি সঠিক এবং সবসময় ব্যবহার করেন এরকম হতে হবে।
# আপনার পাসপোর্ট ঢাকায় রেডি হয়ে গেলে এবং চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দিলে তারা আপনাকে একটি মেইল দিবে যে আপনার পাসপোর্টটি চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মেইলটি পাওয়ার একদিন পরেই আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার ডেলিভারি স্লিপ কি জমা দিয়ে আপনি আপনার পাসপোর্ট নিয়ে আসতে পারবেন। ডেলিভারি স্লিপ জমা দেওয়ার সময় যদি জিজ্ঞেস করে আপনি কোন মেইল পেয়েছেন কিনা তখন বলবেন পেয়েছেন । তা না হলে আপনি যদি তাদের পাসপোর্ট রেডি এই মেইলটি র জন্য অপেক্ষা করেন তাহলে আমার মত 17 দিন অপেক্ষা করতে হবে তারপরেও তারা মেইল টা দিবেনা।
# জরুরী কিংবা সাধারণ পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে আপনি এক সপ্তাহের মধ্যে পেয়ে যাবেন। সুতরাং নতুন জরুরি করার জন্য আপনার আলাদা করে টাকা দেওয়ার দরকার নেই সাধারণ পাসপোর্ট করলেও আপনি সাতদিন আর দিন বা দশ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। এখন অবশ্য ই-পাসপোর্টে ভীর কম তাই হয়তো তাড়াতাড়ি তারা পাসপোর্ট দিয়ে দিচ্ছে।
# আগেই বলেছি আমি 17 দিন পরে পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি যদিও আমি এক্সপ্রেস পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেছিলাম। আমাকে 10 দিনের মধ্যে দেয়ার কথা কিন্তু আমি ডেলিভারি মেইল এর জন্য অপেক্ষা করেছিলাম যে কারণে আমি পাসপোর্ট নিতে যাইনি। আমার বুদ্ধিমান বন্ধুটি সাধারণের আবেদন করে যখনই চট্টগ্রামে পাসপোর্ট শিফট হয়েছে মেইলটি পাওয়ার পর তিনি নিজে গিয়েই ডেলিভারি স্লিপ জমা দিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে এসেছেন।তারপর একইভাবে আমি মেইল না পাওয়ার পরেও শুধুমাত্র ডেলিভারি স্লিপ জমা দিয়ে আবার পাসপোর্টটা নিয়ে আসি। আমি জানিনা চট্টগ্রাম মনসুরাবাদ এ কেন তারা পাসপোর্ট আসার পরেও গ্রাহককে কোন ধরনের মেইল বা এসএমএস দেন না।সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয়গুলো আপনি পাসপোর্ট নিয়ে বাসায় আসার পর আপনি মেইল এবং এসএমএস পাবেন যে আপনার পাসপোর্টটি রেডি হয়েছে।
# আরেকটি বিষয় ই-পাসপোর্ট করার জন্য আপনার কোন ধরনের ছবি সংযুক্ত করতে হবে না।
# অ্যাপোয়েন্টমেন্ট এবং ছবি তোলার একই দিনে সুতরাং যে শার্ট টি পড়ে যাবেন সেটি যেন গাঢ় রংয়ের হয়। হালকা রঙের হলে সেটি ছবিতে ভালো দেখায় না। তারা আপনাকে শার্ট চেঞ্জ করে আসতে বলতে পারে।
# গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় মনে রাখবেন। ই পাসপোর্ট করতে স্মার্ট আইডি কার্ড দরকার । যদি আপনার স্মার্ট আইডি কার্ড না থাকে তবে পুরাতন আইডি কার্ডটি দিয়ে আপনি ই পাসপোর্ট করতে পারবেন না। তবে ই পাসপোর্ট করতে আপনার স্মার্ট আইডি কার্ডের নাম্বারটি থাকলে বা টেম্পোরারি স্মার্ট আইডি কার্ড থাকলে আপনি করতে পারবেন। তবে আমি অনেকের কাছে শুনেছি তারা পুরাতন আইডি কার্ড দিয়ে ই পাসপোর্ট করতে পারছেন সেক্ষেত্রে আমি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনাদের যোগাযোগ করতে বলবো কিংবা ফেসবুকে অন্যান্য গ্রুপে একটু তথ্য সংগ্রহ করে দেখতে পারেন। যারা এখনো স্মার্ট আইডি কার্ড পাননি তারা আগের আইডি কার্ড দিয়েই পাসপোর্ট করতে পারবেন তবে আপনার স্মার্ট আইডি কার্ড ইস্যু হয়ে গেলে আপনি আগের আইডি কার্ড দিয়ে আর ই পাসপোর্ট করতে পারবেন না।
# পাসপোর্ট করতে গিয়ে কোন ধরনের ঝামেলার সম্মুখীন হলে আপনি সরাসরি 202 নাম্বার রুমে গিয়ে সাধন দাস নামে একজন অফিসার আছেন তার সাথে কথা বলবেন। আমি শুনেছি উনি সবাইকে খুবই হেল্প করেন।
# পাসপোর্ট করার আবেদন টি যেদিন সাবমিট করতে যাবেন সেদিন অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট আবেদনের এর তিন কপি প্রিন্ট করে নিয়ে যাবেন। যদি কোনো কারণে উনারা একটি কপি বাতিল করে দেয় তাহলে আপনি সাথে সাথে আরেকটি কপি দিয়ে আপনার কাজটি শেষ করতে পারবেন আমি আপনাদের সাজেস্ট করবো আপনার সব ধরনের ডকুমেন্ট 3 কপি করে নিয়ে যাবেন। ব্যাগের অবশ্যই গাম এবং স্ট্যাপলার রাখবেন।
আশা করছি সবার কাজে লাগবে আমার তথ্যগুলো । যদি আপনার কাজে লাগে অবশ্যই শেয়ার করবেন তাতে অন্যদেরও কাজে লাগবে। আমি নিজে দেখতে পাচ্ছি এমআরপি পাসপোর্ট করতে গিয়ে মানুষ জানতে পারছে যে ই-পাসপোর্ট করা যাচ্ছে। ই-পাসপোর্টে সহজে করা যাচ্ছে। শুধুমাত্র তথ্যের অভাবে চট্টগ্রামের মানুষ এমআরপি পাসপোর্ট করছে । তাই ভুলেও এমআরপি পাসপোর্ট না করে আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন। https://www.epassport.gov.bd/landing
আব্দুল হান্নান ভাই’র ওয়াল থেকে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন