* দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা*

ইসলামী ব্যাংক দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র * সকল প্রকার একাউন্ট খুলতে * * টাকা জমা করতে * টাকা উঠাতে * * বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স এর টাকা বোনাসসহ উঠাতে * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে আসুন। * * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা* * প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ 01711-458151* 01700-925241*

শুক্রবার, ২০ মার্চ, ২০২০

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৩১ সাল।
বুধবার, সকাল ৯টা। বেনগাজির উত্তরাঞ্চল ‘সালুক’-এ ইতালিয়ানরা ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করে। একটুপরই এখানে ফাঁসির দড়িতে লটকানো হবে লিবিয়ার মুজাহিদ নেতা, সানুসি আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক, জাবালে আখজারের লৌহমানব, মরুসিংহ উমর মুখতারকে। এখানেই তাঁকে সাম্রাজ্যবাদী ইতালির বিরুদ্ধে ২০ বছর যাবত জিহাদের স্বাদ মিটিয়ে দেওয়া হবে।

ইতালিয়ান পশুগুলোর মন-মানসিকতা ছিল বড় ইতর। তারা ইতিহাসের ঘৃন্য কাজটাই করে দেখাল। উমর মুখতারকে জনগণণের চক্ষুর অন্তরালে ফাঁসি দিতে তাদের ইতরামি বাধা দিয়ে বসলো। বিভিন্ন গণবন্দিশিবিরে আটককৃত প্রায় ২০ হাজার আবালবৃদ্ধবনিতাকে সে জায়গায় উপস্থিত করল তারা। পাশাপাশি লিবিয়ার বিভিন্ন গোত্রীয় মোড়ল এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকেও আনতে বাধ্য করল। চর্মচক্ষু দিয়ে তাদের নেতা উমর মুখতারের ফাঁসির হৃদয়বিদারক দৃশ্য অবলোকন করার জন্য!
ড. উনাইজি। বেনগাজির একজন উঁচু শ্রেণির লোক। তিনিও উপস্থিত লোকদের মধ্যে ছিলেন। উমর মুখতারের ফাঁসির সেই অন্তর বিদীর্ণকারী মুহূর্তের কথা নাহয় তাঁর জবান থেকেই শুনুন--
‘সে সময় উপস্থিত লোকদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। লিবীয় নেতা উমর মুখতারকে ফাঁসির দড়িতে দেখে আমি সহ্য করতে পারিনি। অসুস্থ হয়ে পড়ি। ওই অলক্ষুণে দিনে ফাঁসি কার্যকরের মুহূর্তে ইতালিয়ানরা আমাকে উপস্থিত হতে ছাড় দেয়নি। হ্যাঁ, তারা আমাকে তখনই ছাড় দিয়েছে, যখন তারা অনুভব করতে পেরেছে যে, আমি অসুস্থ ও অপারগ হয়ে পড়েছি!
হায় আল্লাহ! ওই মুহূর্ত কতইনা ভয়ানক, যে মুহূর্তে উমর মুখতার খুবই ধির কদমে এবং অদ্ভুত বীরত্বে শাহাদাত পাঠ করতে করতে ফাঁসির রজ্জুর দিকে হেঁটে হেঁটে চললেন! তখন তিনি বারবার শাহাদাতাইন পাঠ করতে লাগলেন- আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্ললাহ!
তিনি হাঁটছেন। ফাঁসির মঞ্চের দিকে। তাঁর চেহারা চমকাচ্ছে। শাহাদাতের আনন্দ আর আল্লাহর ফয়সালার খুশিতে। যখনই তিনি ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে উঠলেন, অমনি ইতালিয়ান হেলিকপ্টারগুলো ফাঁসির আঙিনার ঠিক উপরে, শূন্যের মধ্যে, খুব কাছাকাছি হয়ে, বিরাট আওয়াজে চক্কর দিতে শুরু করল! কিন্তু ফাঁসি কার্যকরের মুহূর্তে কেন এই হেলিকপ্টারের মহড়া?
যাতে পরিবেশটা আর সুন্দর না থাকে। হইচই শুরু হয়ে যায়। লিবীয় জনতা তাদের নেতা উমর মুখতারের কোনো বিদায়ী বার্তা শুনতে না পায়! কারণ, হয়তোবা তিনি বিদায়কালে তাঁর জাতীর উদ্দেশ্যে এমনকিছু বলে ফেলতে পারেন, যা তাদের শিরা-উপশিরাগুলোতে জিহাদের জজবা হাজারগুণ বৃদ্ধি করে দিতে পারে!
ফাঁসির মঞ্চে উঠলেন উমর মুখতার। অত্যন্ত ধীরেসুস্থে ও অবিচলতার সাথে ফাঁসির রজ্জু গলে পরলেন। ঠিক তখনই জল্লাদ ফাঁসির দড়িতে ধরে মারল টান! কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর পবিত্র আত্মা সন্তুষ্টজনক আর সন্তুষভাজন হয়ে ঊর্ধ্বগগন পানে করল রওয়ানা। আপন রবের সাথে মোলাকাত করতে।
উমর মুখতার যখন দৃপ্ত কদমে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে চলছিলেন, সেই ভয়ানক মুহূর্তে ভীতবিহ্বল জনতা তাঁর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। উমরের হাত দুটো ছিল বাঁধা। লোহার বেড়ি দিয়ে। তাঁর চেহারায় তখন পরম তৃপ্তির মুচকি হাসি দ্যুতি ছড়াচ্ছিল। এই মুচকি হাসি ছিল তাঁর জাতীকে বিদায়মুহূর্তে শেষবারের মতো মুচকি হাসি!
ফাঁসির সময় যারা তার একেবারে কাছে ছিল, ফাঁসির মঞ্চে সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময় তাদের কেউ একজন উমরকে ধীরকণ্ঠে নামাজের আজানের মতো আজান দিতে শুনতে পেল! জনৈক লিবীয় কর্মকর্তা তার একেবারে কাছে ছিলেন। জল্লাদ যখন তাঁর গলায় ফাঁসির রজ্জু পরাচ্ছিল, তখন ওই কর্মকর্তা উমরকে শুনতে পেলেন, তিনি সুরা আল-ফাজরের ২৭-২৮ নং আয়াতদ্বয় তিলাওয়াত করছেন- ‘হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার রবের কাছে সন্তুষ্টজনক ও সন্তুষভাজন হয়ে ফিরে যাও!’
শহিদ উমর মুখতারের শাহাদাত নিয়ে অনেক কবিই শোকাবহ কাব্য রচনা করেছেন। যা একটি দাস্তান হবার মতো। তাদের মধ্যে কবিকুলের সম্রাট আহমদ শাওকির কবিতা একটু বেশিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। দু-চারটি পঙক্তি শুনুন-
‘তোমার দেহাবশেষ পুঁতে নিল তারা বানিয়ে বালুর নিশান,
যে নিশান জাগিয়ে তুলে মরুর উপত্যকা বিকেল-বিহান।
এ তো এমন জখম ও নির্মম বলি, যা চিৎকার করে যায়,
যুগ থেকে যুগান্তর টুকটুকে লাল স্বাধীনতা খোঁজে বেড়ায়।’
সূত্র : লায়ন অব দ্য ডেজার্ট : ১৩৮-১৪৬
মূল : ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি
অনুবাদ : আইনুল হক কাসিমী

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র শুভেচ্ছা.

  বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  প্রতিবছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। তাই এ দিন সকল কালিমা আর কলুষতাক...