বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ রাসুল (সা.) যখন প্রকাশ্যে ইসলামের ঘোষণা দিলেন, তখন সবার আগে মক্কার যে মানুষটি তার বিরোধিতা করেছিলেন তিনি ছিলেন আবু লাহাব। এই ঘটনার কিছু দিন পর রাসুল (সা.) তার সব নিকটাত্মীয়দেরকে নিয়ে একবার নৈশভোজের আয়োজন করলেন। খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষে নবিজি (সা.) যখন কথা শুরু করতে যাবেন, তখনই আবু লাহাব আবারো বাগড়া দিলেন। নবিজির (সা.) সমস্ত আয়োজন ভুন্ডুল করে দিলেন। নবিজিকে (সা.) কথাই বলতে দিলেন না।
পরপর দুটো উদ্যেগ আবু লাহাবের কারণে নস্যাৎ হয়ে যাওয়ার পর রাসুল (সা.) কিছুদিন চুপ থাকলেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হলো, তিনি ক্ষতটা শুকানোর জন্য সময় নিচ্ছেন।
এমতাবস্থায় নবিজির (সা.) দু একজন আত্মীয় তাকে পরামর্শ দিলেন যাতে এ জাতীয় পরবর্তী বৈঠকে তিনি আবু লাহাবকে আর দাওয়াত না দেন। নবিজি (সা.) বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবলেন এবং তারপর পরবর্তী বৈঠকেও আবু লাহাবকে দাওয়াত দেয়ার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নিলেন। আবু লাহাবের পক্ষ থেকে এতটা বাঁধা আসার পরও তাকে দাওয়াত দেয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ ছিল।
প্রথমত, আবু লাহাবের বাসা ছিল নবিজির (সা.) বাসার একেবারে পাশেই আর দ্বিতীয়ত আবু লাহাবকে এড়িয়ে গিয়ে অন্যন্য চাচাতো ভাই বা জ্ঞাতি ভাইদেরকে দাওয়াত দেয়ার তেমন কোনো সুযোগও ছিল না। বিষয়টি ভালোও দেখাতো না। তৃতীয়ত, নবিজি (সা.) আশংকা করছিলেন যে, আবু লাহাবকে বাদ দিয়ে এ ধরনের কোনো আয়োজনের খবর যদি তার কানে চলে যায়, তাহলে সে হয়তো আরো বেশি ঝামেলা করতে পারে। আর, চতুর্থত, সবচেয়ে বড়ো কথা, নবিজি (সা.) সবসময়ই মানুষের অন্তরের পরিবর্তনের বিষয়ে আশাবাদি ছিলেন, এমনকী ঘোর দুশমনের অন্তর পরিবর্তন নিয়েও তিনি আশাবাদি ছিলেন।। এ কারণেই, আবু লাহাব বার বার তাকে ন্যাক্কারজনকভাবে ফিরিয়ে দেয়ার পরও নবি মুহাম্মাদ (সা.) তার বিষয়ে হাল ছেড়ে দেননি। বরং তিনি শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তাকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন।
এই দৃষ্টান্তগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি, দ্বীনের ময়দানে যারা কাজ করবেন, বিশেষ করে যারা দাওয়াতের ফিল্ডে কাজ করবেন, তাদের এত অল্পে রিএ্যাক্ট করলে চলবে না।
Copy post Ali Ahmad Mabrur
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন