১। হাড়ের জন্য:- “ঘিয়ের ভিটামিন ‘কে’ ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলে হাড়ের স্বাস্থ্য ও গঠন বজায় রাখে। স্বাস্থ্যকর ইনসুলিন ও শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে কাজে লাগে ভিটামিন ‘কে।” বলেন চ্যাডউইক। ঘিতে যেসব ভিটামিন রয়েছে -এ, ডি, ই এবং কে, যা আমাদের হৃৎপিন্ড,হাড়ের জন্য খুব উপকারী। এই ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক লুব্রিকেন্ট যা গিঁটে ব্যথা ও আর্থ্রাইটিসের সমস্যা সমাধানে কাজ করে। তাছাড়া এর মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এটি অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে কাজ করে এবং হাড়কে ভালো রাখে।
২। চুল পড়া প্রতিরোধ করে:- খালি পেটে ঘি খেলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এটি চুল পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। ঘি চুল নরম, উজ্জ্বল করতে উপকারী।
৩। উপকারি কোলস্টেরল:- কোলস্টেরল দু ধরনের- উপকারি ও ক্ষতিকর।ঘিতে রয়েছে উপকারি কোলস্টেরল। ঘিতে রয়েছে কনজুগেটেড লিনোলেক অ্যাসিড। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ রয়েছে।যা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।ডেলিভারির পর নতুন মায়েদের ঘি খাওয়ানো হয় এই কারণেই।
৪। স্মৃতিশক্তি বাড়ায়/ব্রেন টনিক হিসেবে কাজ করে:- নিউট্রিশনিস্টদের মতে নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিকবাবে ব্রেন পাওয়ারের উন্নতিতে ঘি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এত উপস্থিত ওমাগা- ৬ এবং ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর এবং মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রাকাশিত বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে এই দুই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫। কনজুগেটেড লিনোলেক অ্যাসিড- এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ রয়েছে। যা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। ডেলিভারির পর নতুন মায়েদের ঘি খাওয়ানো হয় এই কারণেই।
৬। ওজন কমায় ও এনার্জি বাড়ায়:- ঘিয়ের মধ্যে থাকা মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড খুব দ্রুত এনার্জি বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।অধিকাংশ অ্যাথলিট দৌড়নোর আগে ঘি খান। এর ফলে ওজনও কমে।
৭। হজম ক্ষমতা বাড়ায়:- ঘিতে রয়েছে প্রচু বাটাইরিক অ্যাসিড, যা আমাদের খাবার তাড়াতাড়ি হজম করতে সাহায্য করে।যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাদের জন্য ঘি খুবই উপকারী।
৮। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:- প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকায়, ঘি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।ঘি এর বৈশিষ্ঠ্য হল নষ্ট হয় না- ঘি সহজে নষ্ট হয় না। দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ঠিক থাকে ঘি।
আরও পড়ুনঃ ঘি না মাখন, কোনটা বেশি উপকারী? ঘি খেলে কী মোটা হয় মানুষ?
১০। পজিটিভ ফুড-:- বহু প্রাচীন কাল থেকেই ঘি পজিটিভ ফুড হিসেবে পরিচিত। আধুনিক গবেষণাও বলছে ঘি খেলে পজিটিভিটি বাড়ে। কনশাসনেস উন্নত হয়।
১১। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়:- ঘিয়ের মধ্যে কোষকে পুনর্গঠন করার ক্ষমতা রয়েছে। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। ঘি ত্বককে ময়েশ্চার করে, ত্বকের রোগ সোরিয়াসিস কমাতে কাজ করে। প্রতিদিন খালি পেটে ঘি খাওয়া শুরু করলে শরীরে ভিতর থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। তাই ত্বকের সৌন্দর্যও বাড়ে।
১২। ত্বকের প্রদাহ কমায়: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় সেই প্রাচীন কাল থেকেই ত্বককে মসৃণ করতে ঘিয়ের ব্য়বহার হয়ে আসছে। শুধু কী তাই, ত্বকের প্রদাহ, ক্ষত এবং পোড়ার দাগ মেটাতেও এটি দারুন কাজে আসে।
১৩। ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে: ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত ফ্রি রেডিকালদের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে কোষের বিন্যাসে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে অনেকেই ঘি সহযোগে রান্না করে থাকেন। এই অভ্যাসও কিন্তু খারাপ নয়। কারণ ঘি-এর “স্মোকিং পয়েন্ট” খুব হাই। ফলে বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলেও কোনও ক্ষতি হয় না।
১৪। চোখকে ভালো রাখে: ঘিতে রেয়েছ ভিটামিন -ই। তাই এটি যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে অবটিক নার্ভের উন্নতি ঘটে। ফলে আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়।
চ্যাডউইক বলেন, “মাখনকে ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করে ঘি তৈরি হয়, ফলে এই সকল আমিষ উপাদান পাত্রে থেকে যায়, শুধু চর্বি অংশটুকু অবশিষ্ট থাকে ঘিতে। আর এই আমিষ অংশটিই পেটের গড়বড়ের জন্য দায়ী।”
“মাখনে থাকে ‘ক্যাসেইন’ ও ‘ল্যাকটোজ’, যা অনেকেরই হজম করতে সমস্যা হয়, অ্যালার্জি দেখা দেয়। মাখন থেকে এই উপাদানগুলো বের করে দিয়ে ঘি তৈরি করলে চর্বি ও পুষ্টিগুনগুলো পাওয়া সম্ভব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। তবে আপনার ঘি সহ্য হয় কি না সেটা আগে নিশ্চিত হতে হবে।” -বলেন চ্যাডউইক।
১৮। প্রদাহরোধী: স্বাস্থ্যকর ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের জন্য চাই স্বাস্থ্যকর চর্বি। ঘাস খেয়ে বেড়ে ওঠা গাভীর দুধ থেকে তৈরি ঘিয়ে মেলে ওমেগা থ্রি ও ওমেগা সিক্স ফ্যাট বা চর্বি। ছোট ও মাঝারি ‘চেইন’য়ের এ্ চর্বি প্রদাহের মাত্রা মৃদু করতে সাহায্য করে। কারণ এই চর্বি দ্রুত ভাঙে এবং হজম হয় সহজে। ফলে হজম প্রক্রিয়া, গলব্লাডার ও কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলী বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুনঃ অলিভ অয়েল ক্যান্সারের প্রবণতা কমায়, হার্ট ভালো রাখে
ঘিতে সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ‘কে’, ‘ই’ এবং ‘বি টুয়েলভ’ থাকে।
ঘিয়ের ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘কে’ চর্বিতে দ্রবণীয়। ফলে চর্বিজাতীয় খাবারের সঙ্গে খেলে শরীরে আরও ভালোভাবে শোষিত হয়। শরীরের প্রয়োজনে ব্যবহৃতও হয় বেশি কার্যকরভাবে।”
২০। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান: কোষকে ‘অক্সিডেটিভ’ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। অক্সিজেনের সঙ্গে পদার্থের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কোষের যে ক্ষয় হয় তাই হচ্ছে ‘অক্সিডেটিভ’ ক্ষতি। শরীরে চিনি বেশি হলে, বিপাকীয় চাপ বেশি হলে, কোষের মাইটোকন্ড্রিয়া ভালোভাবে কাজ না করলে এবং ইনসুলিনের অনিয়ম হলে এই সমস্যা হয়। অতিরিক্ত অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই সমস্যার ঝুঁকি কমাতে কিছুটা হলেও অবদান আছে ঘিয়ের।
২১। নষ্ট হয় না– ঘি সহজে নষ্ট হয় না। প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে ঘি।
২২।স্ফুটনাঙ্ক– ঘি-এর স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি। ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত খাঁটি ঘি গরম করা যায় যেমন বিডি হেলথ ঘি। অধিকাংশ তেলই এই তাপমাত্রায় গরম করলে ক্ষতিকারক হয়ে যায়।
২৩। কোষ্ঠকাঠিন্য: ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে ন্যাচারাল লুব্রিকেটিং, যা এক ধরনের পিচ্ছিল উপদান। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা এক কাপ দুধের মধ্যে এক চামচ ঘি মিশিয়ে কিছুক্ষণ চুলার ওপর রাখুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি পান করুন।
২৪। স্বাদ: সুন্দর গন্ধ ও স্বাদ অথচ অধিকাংশ দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো ঘি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
২5। ভিটামিন: ভিটামিন এ ও ই থাকায় ঘি পুষ্টিগুণে ভরপুর।
২৭। রাগ প্রশমন:বিশেষ কোনো কারণে কিংবা বিনা কারণে খুব রেগে গেছেন। গ্লাস ভাঙে কিংবা কুটিকুটি করে কাগজ ছিঁড়েও কাজ হচ্ছে না। হাতে একটু ঘি নিয়ে নাকে লাগান। এবার স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস নিন। দেখবেন এর সুগন্ধটা আপনার মন আর মস্তিষ্ককে বশে এনে ফেলেছে। আর রাগের বিষয়টি— ততক্ষণে ভুলে গেছেন আপনি।
২৮। মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমায়:
২৯। কোষ্ঠকাঠিন্যে: যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাঁদের জন্য ঘি খুবই উপকারী।
৩০। মানসিক বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা মুছে ফেলে:
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন