* দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা*

ইসলামী ব্যাংক দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র * সকল প্রকার একাউন্ট খুলতে * * টাকা জমা করতে * টাকা উঠাতে * * বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স এর টাকা বোনাসসহ উঠাতে * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে আসুন। * * দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ বাজার এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র শনিবারসহ ৬ দিন খোলা* * প্রয়োজনে যোগাযোগ করুনঃ 01711-458151* 01700-925241*

বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২১

আবদুর রহমান ইবন ’আউফ (রা)

 

বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ ইমাম বুখারীর মতে জাহিলী যুগে আবদুর রহমান ইবন ’আউফের নাম ছিল ’আবদু ’আমর। ইবন সা’দ তাঁর ‘তাবাকাতে’ উল্লেখ করেছেন, জাহিলী যুগে তাঁর নাম ছিল ’আবদু কা’বা। ইসলাম গ্রহণের পর রাসূল সা. তাঁর নাম রাখেন ‘আবদুর রহমান’। তাঁর মাতা-পিতা উভয়ে ছিলেন ‘যুহরা’ গোত্রের লোক। মাতার নাম শিফা বিনতু ’আউফ। দাদা ও নানা উভয়ের নাম ’আউফ।

ইবন সা’দ ওয়াকিদীর সূত্রে উল্লেখ করেছেন, তিনি ’আমূল ফীলের (হস্তীর বৎসর) দশ বছর পর জন্মগ্রহণ করেন। এ বর্ণনার ভিত্তিতে তিনি রাসূলুল্লাহ সা. থেকে বয়সে দশ বছর ছোট। রাসূল সা. ’আমুল ফীলের ঘটনায় পঞ্চাশ দিন পর জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু ইবন হাজার তাঁকে রাসূলুল্লাহর সা. তের বছর ছোট বলে উল্লেখ করেছেন।
রাসূলুল্লাহর সা. নবুওয়াত প্রাপ্তির পর প্রথম পর্যায়ে যাঁরা ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি তাঁদেরই একজন। মক্কার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিদিনই হযরত আবু বকরের বাড়ীতে বৈঠকে মিলিত হতেন। আবদুর রহমানও ছিলেন এ বৈঠকের একজন নিয়মিত সদস্য। আবু বকরের সাথে ছিল তাঁর গভীর বন্ধুত্ব। আবু বকরের দাওয়াতেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। আবু বকরের বাড়ীর এ বৈঠকের নিয়মিত পাঁচজন সদস্যের নাম ইতিহাসে পাওয়া যায়। যেমনঃ উসমান, সা’দ, তালহা, যুবাইর এবং আবদুর রহমান। তাঁদের সকলেই আবু বকরের দাওয়াতে প্রথম পর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলামের জন্য অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ লাভ করেন।
নবুওয়াতের পঞ্চম বছর রজব মাসে যে এগারজন পুরুষ ও চারজন নারীর প্রথম কাফিলাটি মক্কা থেকে হাবশায় হিজরাত করে তার মধ্যে আবদুর রাহমানও ছিলেন। আবার রাসূলের সা. মদীনায় হিজরাতের পর তিনিও মদীনায় হিজরাত করেন। যাঁরা হাবশা ও মদীনা দু’স্থানেই হিজরাত করেছিলেন তাঁদেরকে বলা হয় ‘সাহিবুল হিজরাতাইন’। মদীনায় তিনি হযরত সা’দ ইবন রাবী’ বলে আল-খাযরাজীর গৃহে আশ্রয় নেন এবং তাঁর সাথেই রাসূল সা. ভ্রাতৃসম্পর্ক স্থাপন করে দেন। এ সম্পর্কে ইমাম বুখারী একাধিক সনদের মাধ্যমে বহু হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ সম্পর্কে হযরত আনাস রা. বলেনঃ ‘আবদুর রহমান ইবন ’আউফ হিজরাত করে মদীনায় এলে রাসূল সা. সা’দ ইবন রাবী’র সাথে তাঁর ভ্রাতৃসম্পর্ক কায়েম করে দেন। সা’দ ছিলেন মদীনার খাযরাজ গোত্রের নেতা ও ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি আবদুর রহমানকে বললেন, ‘আনসারদের সকলে জানে আমি একজন ধনী ব্যক্তি। আমি আমার সকল সম্পদ সমান দু’ভাগে ভাগ করে দিতে চাই। আমার দু’জন স্ত্রী আছেন। আমি চাই, আপনি তাদের দু’জনকে দেখে একজনকে পছন্দ করুন। আমি তাকে তালাক দেব। তারপর আপনি তাকে বিয়ে করে নেবেন।’ আবদুর রহমান বললেনঃ ‘আল্লাহ আপনার পরিজনের মধ্যে বরকত ও কল্যাণ দান করুন! ভাই, এসব কোন কিছুর প্রয়োজন আমার নেই। আমাকে শুধু বাজারের পথটি দেখিয়ে দিন।’
ইসলামী ভ্রাতৃত্বে হযরত সা’দের এ দৃঢ় আস্থা ও অতুলনীয় উদারতার দৃষ্টান্ত ইসলামী উম্মাহ তথা মানব জাতির ইতিহাসে বিরল। অন্যদিকে হযরত আবদুর রহমানের মহত্ব, আত্মনির্ভরতা ও নিজ পায়ে দাঁড়ানোর দৃঢ় সংকল্পও বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।
মদীনায় অবস্থানের দ্বিতীয় দিন আবদুর রহমান তাঁর আনসারী ভাই সা’দকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘বেচাকেনা হয় এমন কোন বাজার কি এখানে আছে?’’ বললেনঃ ‘‘হাঁ, ইয়াসরিবে (মদীনায়) কায়নুকার বাজার তো আছে।’’ হযরত আব্দুর রহমান এক স্থান থেকে কিছু ঘি ও পনির খরিদ করে বাজারে যান। দ্বিতীয় দিনও তিনি এমনটি করলেন। এভাবে তিনি বেচাকেনা জারি রাখেন। কিছু পয়সা হাতে জমা হলে তিনি এক আনসারী মহিলাকে বিয়ে করেন।
বিয়ের পর তিনি একদিন রাসূলুল্লাহর সা. খিদমতে হাজির হলেন। তাঁর কাপড়ে হলুদের দাগ দেখে রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি বিয়ে করেছ?’ বললেন, ‘হাঁ’। জিজ্ঞেস করলেন কাকে?’ তিনি বললেন, ‘এক আনসারী মহিলাকে।’ রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন, ‘মোহর কত নির্ধারণ করেছ?’ তিনি বললেন, ‘কিছু সোনা।’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, ‘একটি ছাগল দিয়ে হলেও ওয়ালিমা করে নাও।’
তিনি ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকলেন। কিছুদিন পর তার হাতে আরও কিছু অর্থ জমা হলে রাসূলুল্লাহর সা. নির্দেশমত ওয়ালিমার কাজটি সেরে নেন। ধীরে ধীরে তাঁর ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত হয়। মক্কার উমাইয়া ইবন খালফের সাথে একটি ব্যবসায়িক চুক্তিও সম্পাদন করেন।
হযরত আবদুর রহমান ইবন ’আউফ বদর, উহুদ ও খন্দক সহ সকল যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেন এবং অত্যন্ত সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দেন। ইমাম বুখারী ‘কিতাবুল মাগাজী’তে বদর যুদ্ধের একটি ঘটনা তাঁরই যবানে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ ‘‘বদর যুদ্ধে, আমি সারিতে দাঁড়িয়ে। তুমুল লড়াই চলছে। আমি ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে আমার দু’পাশে দুই নওজোয়ানকে দেখলাম। তাদের ওপর আমার খুব একটা আস্থা হলো না। তাদের একজন ফিসফিস করে আমাকে জিজ্ঞেস করলোঃ ‘‘চাচা, বলুন তো আবু জাহল কোন দিকে?’’ বললাম, ‘‘ভাতিজা, তাকে দিয়ে কি করবে?’’ সে বলল, ‘‘আমি আল্লাহর সাথে অংগীকার করেছি, হয় আমি তাকে কতল করবো, না হয় এ উদ্দেশ্যে আমার নিজের জীবন কুরবান করবো।’’ একই কথা ফিসফিস করে আমাকে বলল অন্যজনও। আবদুর রহমান বলেন, ‘‘তাদের কথা শোনার পর আমার আনন্দ হলো এই ভেবে যে, কত মহান দু’ব্যক্তির মাঝাখানেই না আমি দাঁড়িয়ে। আমি ইশারা করে আবু জাহলকে দেখিয়ে দিলাম। অকস্মাৎ তারা দু’জন একসাথে বাজপাখীর মত আবু জাহলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যেই তাকে কতল করে। এ দু’নওজোয়ান ছিল ’আফরার দু’পুত্র মুয়ায ও মু’য়াওবিয।’ বদর যুদ্ধে আবদুর রহমান পায়ে আঘাত পান।
উহুদের যুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। এ যুদ্ধেও তিনি অসম সাহসিকতা প্রদর্শন করেন। রাসূল সা. উহুদ পর্বতের এক কোণে আশ্রয় নিয়েছেন, উবাই ইবন খালফ এগিয়ে এলো আল্লাহর রাসূলকে শহীদ করার উদ্দেশ্যে। আবদুর রহমান তাকে জাহান্নামে পাঠাবার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হলে রাসূল সা. তাঁকে বাধা দেন। অতঃপর রাসূল সা. নিজেই হারিস ইবন সাম্মার নিকট থেকে বর্শা নিয়ে উবাই ইবন খালফের গর্দানে ছুড়ে মারেন। সামান্য আহত হয়ে সে চেঁচাতে চেঁচাতে পালিয়ে যায় এবং মক্কার পথে ‘সারফ’ নামক স্থানে নরক যাত্রা করে।
সুত্রঃ আসহাবে রাসুলেে জীবন কথা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র শুভেচ্ছা.

  বাংলাদেশ বার্তা ডেস্কঃ  প্রতিবছর ঈদ আসে আমাদের জীবনে আনন্দ আর সীমাহীন প্রেম প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। তাই এ দিন সকল কালিমা আর কলুষতাক...